বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক জোরদারে চতুর্থবারের মতো বৈঠক

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক জোরদারে চতুর্থবারের মতো বৈঠক

জাতিসংঘে ‘টু-স্টেট সল্যুশন’ বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। বৈঠকে অংশ নেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

পাকিস্তানি গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর এটি দুই দেশের চতুর্থ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গতিশীলতা বৃদ্ধির স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে। দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন কাটিয়ে দু’দেশ এখন ভবিষ্যতমুখী নীতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকে রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং এসব খাতে সম্পর্ক আরও গভীর করতে একমত হয়েছে উভয় দেশ। তারা পারস্পরিক জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, উচ্চপর্যায়ের সফর আয়োজন এবং ভবিষ্যতে যৌথ কার্যক্রমের সম্ভাবনার কথাও বলেন।

এছাড়াও, গাজায় চলমান মানবিক সংকট এবং ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে। সম্মেলন থেকে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত আসবে— এমন প্রত্যাশাও জানায় তারা।

সম্প্রতি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভির ঢাকা সফর এবং বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে ভিসামুক্ত যাতায়াত চুক্তি হয়, যা পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে, বিশেষ করে পাকিস্তানি কূটনীতিকদের ওপর। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অঞ্চলিক কূটনীতিতে নতুন ভারসাম্য তৈরি হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং সার্কের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক কৌশলে পরিবর্তন আসছে। দুই দেশই বাস্তবভিত্তিক, ইস্যুকেন্দ্রিক এবং উন্নয়নমুখী কূটনীতিকে প্রাধান্য দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *