টোকিও, ৩০ মে ২০২৫:
বাংলাদেশ ও জাপান চলতি বছরের শেষের দিকে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (EPA) স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার টোকিওতে জাপানি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার মধ্যে বৈঠকে এই ঘোষণা আসে।
বৈঠকে উভয় নেতা দুই দেশের মধ্যকার গভীর বন্ধুত্ব ও কৌশলগত সম্পর্ক জোরদারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী ইশিবা বলেন, জাপান সবসময় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পাশে থাকবে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে আগ্রহী।
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রশংসা করে জাপানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতার এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।” দুই নেতা জানান, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে তারা EPA চুক্তির মাধ্যমে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চান।
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে জাপানের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “জাপানের সক্রিয় সহায়তা আমাদের সংস্কার প্রক্রিয়ায় অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অধ্যাপক ইউনূস আরও জানান, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নৌ নিরাপত্তা, পরিবহন স্বাধীনতা, সমুদ্র সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে বাংলাদেশ জাপানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রস্তুত। এছাড়া এলএনজি টার্মিনাল, এক্সপ্রেসওয়ে ও সেতু নির্মাণে জাপানের সফট লোনের প্রস্তাবও দেন তিনি।
তিনি জাপানি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে অটোমোবাইল, ইলেকট্রিক যান, হাই-টেক শিল্প এবং সৌর খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। শ্রমশক্তি আদান-প্রদানের অংশ হিসেবে দক্ষ কর্মী বিনিময় কর্মসূচি চালুর কথাও প্রস্তাব করেন তিনি।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য জাপানে বৃত্তি এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়। রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে জাপানের সহায়তা দ্বিগুণ করার আহ্বান জানান ইউনূস।
প্রধানমন্ত্রী ইশিবা তার পূর্বের বাংলাদেশ সফরের স্মৃতি স্মরণ করেন এবং অধ্যাপক ইউনূসের মাইক্রোক্রেডিট উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “জাপানের মানুষ অধ্যাপক ইউনূসকে অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখে।”
পরিশেষে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।