
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা ‘জুলাই-আগস্ট মামলায়’ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ রোববার সকালে তিনি ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হন এবং শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাকে জেরা করেন।
নাহিদ ইসলাম তার জবানবন্দিতে বলেন, গত বছরের ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ ও ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে আখ্যা দেন। এই বক্তব্য আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার একটি বৈধতা তৈরি করে, কারণ সরকারের বিরুদ্ধে ন্যায্য আন্দোলন হলেই এই ধরনের মন্তব্য করা হতো।
তিনি আরও জানান, শেখ হাসিনার এই মন্তব্যে শিক্ষার্থীরা অপমানিত বোধ করেন এবং সেই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন।
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ বলেন, ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন যে, আন্দোলন ঠেকাতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। পরদিন, ১৬ জুলাই সারা দেশে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হলে পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ শহীদ হন। সেদিন চট্টগ্রামে ওয়াসিম-সহ আরও ছয়জন প্রাণ হারান।
তিনি আরও জানান, ১৭ জুলাই দেশব্যাপী পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়, যার ধারাবাহিকতায় ১৮ জুলাই সারা দেশে ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে আসেন। সেই রাতে দেশব্যাপী ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা আবারও আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি চালায়।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। এই মামলার অভিযোগপত্র মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার এবং ৮১ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে।