
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং উৎসবমুখর সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বুধবার স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় মৌনির সাতৌরি-র নেতৃত্বে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের (এমইপি) সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস প্রতিনিধি দলকে জানান, নির্বাচনের সময়সূচি ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে এবং এটি পবিত্র রমজান মাসের ঠিক আগে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি দেশের তরুণদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে যে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে, সে কথাও উল্লেখ করেন। দীর্ঘ সময় পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন পুনরায় শুরু হওয়ায় তরুণদের মধ্যে এটি বিশেষ উদ্দীপনা তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, “সাধারণ নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ, পরিচ্ছন্ন, স্বচ্ছ এবং উৎসবমুখর।” কিছু শক্তি নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করলেও, অন্তর্বর্তী সরকার নির্ধারিত সময় অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বাস করেন যে, ১৫ বছরেরও বেশি সময় পর ভোট দেওয়ার সুযোগ পাওয়ায় তরুণ ভোটাররা রেকর্ড সংখ্যক ভোট দেবেন। তিনি মন্তব্য করেন, “ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুন সূচনার সাক্ষী হবে। এটি আমাদের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় চিহ্নিত করবে।”
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা এবং ইইউ প্রতিনিধিরা সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত সমর্থন এবং চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে মত বিনিময় করেন।
সফররত এমইপিরা বলেন, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে পারে। একজন আইনপ্রণেতা গত ১৪ মাস ধরে প্রধান উপদেষ্টা ও তার দলের “অসাধারণ” প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। একজন ডাচ এমইপি বলেন, বাংলাদেশ এমন কয়েকটি দেশের মধ্যে থাকতে পারে যেখানে “পরিস্থিতি সঠিক দিকে যাচ্ছে।”
অধ্যাপক ইউনূস ইইউকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশে বসবাসরত ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তহবিল বাড়াতে আহ্বান জানান। বিশেষ করে তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুলগুলো পুনরায় চালু করার জন্য সাহায্যের আবেদন করেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকি অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া প্রধান শ্রম সংস্কারগুলোর কথা তুলে ধরেন। এছাড়া এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মুরশেদ সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।