
ম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দু তরুণদের ওপর চরম নির্যাতন চালানো হচ্ছে এবং তাদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা চলছে। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এটি একটি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচার। প্রকৃতপক্ষে, এটি বরিশালে চুরির অভিযোগে দুই মুসলিম তরুণকে মারধরের পুরোনো ভিডিও।
ঘটনার পেছনের আসল চিত্র
অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি গত ১৬ মার্চ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ব্রিজ এলাকার। ‘ঢাকা মেইল’সহ বেশ কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, ওয়ার্কশপ থেকে লোহার পাত চুরির অভিযোগে মিঠুন (২০) ও লিংকন (২৩) নামের দুই তরুণকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। ভিডিওতে যাকে মারধর করতে দেখা যায়, তিনি ওয়ার্কশপের মালিক।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির হোসেন শিকদার নিশ্চিত করেছেন, এই ঘটনাটি বেশ কিছুদিন আগের এবং এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি বর্তমানে কারাগারে আছেন। তিনি আরও জানান, নির্যাতনের শিকার দুই তরুণ হিন্দু নয়, বরং তারা মুসলিম। মিঠুন দোয়ারিকা গ্রামের চান মুন্সির ছেলে এবং লিংকন একই গ্রামের বাবুল বেপারীর ছেলে।
মিথ্যা প্রচারের উদ্দেশ্য
এই ঘটনাটি একটি স্থানীয় অপরাধের ঘটনা হলেও, কিছু অসৎ ব্যক্তি এটিকে ধর্মীয় সংঘাতের রূপ দিতে চেয়েছে। তারা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর চরম নির্যাতন চলছে। এটি ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর প্রচারের মাধ্যমে সমাজে অস্থিতিশীলতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে। জননিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকার এ ধরনের মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে।