
প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মার্শাল আইল্যান্ডের জাতীয় সংসদ ভবন (নিটিজেলা) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংস হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) স্থানীয় সময় গভীর রাতে শুরু হওয়া আগুন রাতভর ধরে বিস্তৃত হয়। মার্শাল আইল্যান্ডের দমকল ও পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, পুরো সংসদ ভবন কার্যত অচল হয়ে গেছে এবং নথি ও আর্কাইভও পুড়ে ছাই হয়েছে।
দমকল বিভাগ জানিয়েছে, ভবনের প্রায় অর্ধেক অংশ রাতভর আগুনে নষ্ট হয়েছে। বাকি অংশও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন, “সংসদ ধ্বংস হয়ে গেছে।” যদিও একটি ফায়ার ট্রাক ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল, আগুন তখন প্রায় পুরো ভবনকে গ্রাস করেছে।
রয়টার্স জানায়, মার্শাল আইল্যান্ড প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়াই ও অস্ট্রেলিয়ার মাঝামাঝি অবস্থিত। দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪২ হাজার, যার অর্ধেক রাজধানী মজুরোতে বসবাস করে। মার্শাল আইল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘কমপ্যাক্ট অব ফ্রি অ্যাসোসিয়েশন’ চুক্তির অধীনে রয়েছে, যা দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিক প্রবেশাধিকার দেয় এবং বিনিময়ে অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করে। এছাড়া দেশটি তাইওয়ানকেও কূটনৈতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম রেডিও নিউজিল্যান্ড জানিয়েছে, গভীর রাতে শুরু হওয়া আগুনে “সব শেষ হয়ে গেছে।” আরএনজেড প্যাসিফিকের মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ প্রতিনিধি গিফ জনসন জানান, সংসদ ভবনের কার্যত কোনো কার্যকর দমকল ব্যবস্থা নেই। শুধু একটি বিমানবন্দর ফায়ার ইউনিট থাকলেও ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে। আগুন নেভানোর আগেই সংসদ কক্ষ, কার্যালয়, গ্রন্থাগার ও আর্কাইভ সব পুড়ে যায়।
অগ্নিকাণ্ডের সময় সংসদের অধিবেশন চলছিল, কিন্তু গভীর রাতে আগুন লাগায় কোনো হতাহত হয়নি। ইতোমধ্যেই বিকল্প ভবনে সংসদ অধিবেশন চালানোর পরিকল্পনা শুরু হয়েছে।
জনসন বলেন, দেশটিতে অগ্নিনির্বাপণ ও তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা সীমিত, ফলে আগুনের কারণ শনাক্ত করা কঠিন হবে। তিনি সতর্ক করেন, “সংসদ ভবনের সব নথি ও ডিজিটাল আর্কাইভ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।”