
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার ঘটনায় পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের মূলে রয়েছে একটি ‘হানিট্র্যাপ’ চক্র।
পুলিশের প্রেস ব্রিফিং থেকে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাদশা নামে এক ব্যক্তি এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার সময় পারুল আক্তার ওরফে গোলাপী নামে এক নারী তাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে। বাদশা বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতিবাদ করলে বাগবিতণ্ডা হয় এবং তিনি ওই নারীকে ধাক্কা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গোলাপী এবং তার সহযোগীরা বাদশাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে।
সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন তার মোবাইল ফোনে এই পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করছিলেন। দুর্বৃত্তরা ভিডিও ধারণ করতে দেখে তুহিনকে সেটি মুছে ফেলতে বলে। তুহিন অস্বীকৃতি জানালে তারা তার ওপর হামলা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে তুহিন একটি দোকানে আশ্রয় নিলেও সেখানেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম জানান, তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করার কারণ ছিল ভিডিওটি মুছে ফেলতে রাজি না হওয়া। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আটজনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ছয়জনকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) এবং দুইজনকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ফয়সাল হাসান, শাহ জালাল, সুমন, মো. মিজান ওরফে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপী, আল-আমিন, মো. স্বাধীন এবং শহীদুল ইসলাম। তাদের সবাই ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য এবং একাধিক মামলার আসামি। এর মধ্যে কেটু মিজানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত সাতজনকে আদালতে তোলা হলে প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এর আগে পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিল।
পুলিশ কমিশনার এই ঘটনায় তাদের কিছু ব্যর্থতা ছিল বলে স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং নিহত তুহিনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার স্বাধীন প্রাথমিকভাবে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।