
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং মীর মুগ্ধ মঞ্চ কমিটির যৌথ উদ্যোগে নির্মিত “মুগ্ধ মঞ্চ” এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীর উত্তরায়। এটি জুলাই আন্দোলনের শহিদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের স্মৃতিকে সংরক্ষণ ও সম্মান জানাতে নির্মিত একটি গুরুত্বপূর্ণ গণমঞ্চ।

আজ সোমবার (৪ আগস্ট) সকালে ‘মুগ্ধ মঞ্চ’ উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন,
“মুগ্ধ মঞ্চ আমাদের মনে করিয়ে দেবে যে, কোনো স্বৈরাচারী শাসন এ দেশে টিকতে পারবে না। সরকার পরিবর্তন হলেও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কার থেমে থাকা উচিত নয়। দেশের প্রতিটি স্তর থেকে ফ্যাসিবাদের বীজ উপড়ে ফেলতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেন,
“এই মঞ্চ একটি গণতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে—যেখানে মুক্ত বিতর্ক, রাজনৈতিক গবেষণা এবং সাংস্কৃতিক চর্চার সুযোগ থাকবে। নাগরিক ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণপরিসরকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা। তিনি বলেন,
“আমরা আর পুরনো বাংলাদেশে ফিরতে চাই না। সামনে এগিয়ে যেতে হলে যে পরিবর্তন দরকার, তা আমাদেরকেই আনতে হবে।”
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন,
“জুলাই শহিদদের আত্মত্যাগ আমাদের প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছে। তবে জুলাই সনদের যদি কোনো আইনগত ভিত্তি না থাকে, সেটি কার্যকর হবে না।”
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান তার বক্তব্যে জানান,
“ঢাকার যেসব স্থানে জুলাই আন্দোলনের শহিদরা নিহত হয়েছেন, সেখানে স্থায়ী স্মৃতিচিহ্ন বা ‘মেমোরি স্ট্যাম্প’ নির্মাণ করা হবে।”
অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন।
নাঈমা সুলতানার মা আইনুন্নাহার বলেন,
“জুলাইয়ে যারা হত্যা করেছে, তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
আহত আন্দোলনকারী আব্দুল আজিজ বলেন,
“আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে গুলি চালানো হয়েছিল। যারা গুলি চালিয়েছিল, তাদের এক মাসের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।”
অনুষ্ঠানের শেষাংশে শহিদ জাবির ইব্রাহিমের পিতা কবির হোসেনসহ আরও অনেকে স্মৃতিচারণ ও দাবি নিয়ে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শহিদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।