
জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রোববার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ এই মামলার শুনানি শুরু হয়। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করছেন।
শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আদালতের সামনে বলেন, “আজকের দিনটি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। পৃথিবীর ইতিহাসে শেখ হাসিনার মতো মিথ্যাবাদী স্বৈরাচার আর জন্ম নেয়নি। তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী স্বৈরাচার।
” তিনি আরও বলেন, “যদি পৃথিবীর সব স্বৈরাচারের একটি সমিতি গঠিত হয়, তাহলে শেখ হাসিনা হবেন তার সভাপতি।”
এই মামলায় অপর দুই আসামি হলেন—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তাদের মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হতে সম্মত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তার আবেদন গ্রহণ করেছে।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে এবং ৩ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের দিন ধার্য করে। একই সঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখও নির্ধারণ করা হয়।
এর আগে, ১ জুলাই প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ করা হয়। শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন এবং অপর আসামিদের পক্ষে যথাক্রমে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ ও অন্যান্যরা অংশ নেন।
গত ১ জুন মামলার প্রাথমিক শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল ৫টি অভিযোগ আমলে নেয় এবং শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পলাতক থাকায় ১৭ জুন ট্রাইব্যুনাল থেকে আত্মসমর্পণের নোটিশ জারি করা হয়, যা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়।
এই মামলার বিচার কার্যক্রম বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। মামলার বিচারক প্যানেলে রয়েছেন—বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক।