
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, “যদি গণহত্যার বিচারের কোনো নির্ধারিত সময়সূচি ছাড়া কেবলমাত্র নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়, তাহলে সেই নির্বাচনকে ‘জুলাই সংগ্রামী’ ও শহীদ পরিবারগুলো ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে।”
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ আয়োজিত ‘জাতি পুনর্গঠন বাংলাদেশ ২.০’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে “বিচার-সংস্কার ও নির্বাচন” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শফিকুল বলেন, “জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই বলে এসেছে—সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্বে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মৌলিক সংস্কার এবং জুলাই গণআন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক শক্তি শুধুমাত্র ক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠকে ব্যস্ত। তারা কখনোই বিচার কিংবা সংস্কারের দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “যেসব শক্তি কেবল নির্বাচনের জন্য সক্রিয়, তারা জনগণের ক্ষোভ, শহীদ পরিবারের দুঃখ কিংবা আহতদের কান্না অনুভব করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আজ পর্যন্ত গণহত্যার বিচারের জন্য মাত্র দুটি ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে, যেখানে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় পঞ্চাশ হাজার আহত হয়েছিল। এই বিচার নিশ্চিত করতে দ্রুত আরও ট্রাইব্যুনাল ও প্রসিকিউটর নিয়োগ জরুরি।”
সংস্কার ছাড়া নির্বাচন যেনতেনভাবে চালানো উচিত নয়
জামায়াত নেতা বলেন, “কোনো রাজনৈতিক দলের চাপে পড়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি রাষ্ট্র সংস্কার বা গণহত্যার বিচারকে এড়িয়ে একটি নির্বাচন আয়োজন করে, তা হলে তা হবে শহীদদের আত্মত্যাগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”
তিনি বলেন, “শুধু রাজনৈতিক সমঝোতা নয়, দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে রাষ্ট্রের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। জামায়াতে ইসলামী জাতীয় স্বার্থে সব যুক্তিসঙ্গত দাবির পক্ষে সমর্থন জানাবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশীদ। আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, শহীদ আনাছের নানাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।