
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিএনপির দীর্ঘ ১৬ বছরের সংগ্রামই বর্তমান সরকারের পতনের পথ তৈরি করেছে। এই সময়কালে আমরা অনেকবার কারাবরণ করেছি, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আন্দোলন চালিয়ে গেছি। একাধিক দল আমাদের পাশে দাঁড়ালেও, অনেক তরুণ রাজনীতিক বাঁচার জন্য আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগে যোগ দিলেও, বিএনপির কেউ কখনও নিজের দল বা প্রতীকের বাইরে যায়নি। আমরা সবসময় ধানের শীষের ব্যানারে রাজপথে সক্রিয় থেকেছি।
শনিবার (২৬ জুলাই) ভোলার লালমোহন উপজেলা পরিষদের হলরুমে লালমোহন উপজেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি। বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল তাকে সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু আমরা যেটা প্রত্যাশা করেছিলাম, সেটা তার নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ দিতে পারেনি। যারা আন্দোলনে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাদের খোঁজ পর্যন্ত নিতে দেখা যায়নি এই উপদেষ্টা পরিষদকে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। গণতান্ত্রিক পথ অনুসরণ না করে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছেন তিনি। তার অধীনে হওয়া নির্বাচনগুলো ছিল একপ্রকার প্রহসন। গণতন্ত্র থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণেই আজ তাদের পতনের সময় ঘনিয়ে এসেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, আজও আমরা সেই লক্ষ্যেই আন্দোলনে আছি। জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের উদ্দেশ্যও ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। কিন্তু গণতন্ত্র ছাড়া রাষ্ট্র চলে না, নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র আসে না। উপদেষ্টা পরিষদের ভিতরেও নির্বাচন পেছানোর প্রবণতা আমরা দেখেছি। মনে হচ্ছে, তারা চায় এই সরকার আরও ৪-৫ বছর ক্ষমতায় থাকুক। কিন্তু তা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে জনগণের রায় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হবে।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) আ ক ম কুদ্দুসুর রহমান। উদ্বোধন করেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের রহমত উল্যাহ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভোলা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ এবং সদস্য সচিব রাইসুল আলমসহ অনেকে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে কাউন্সিলররা লালমোহন উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে জাফর ইকবাল এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সফিকুল ইসলাম বাবুল পঞ্চায়েতকে নির্বাচিত করেন।
লালমোহন পৌর বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ছাদেক মিয়া জান্টু এবং সম্পাদক হয়েছেন কামরুল ইসলাম বাবুল পাটওয়ারী।