
ঢাকা, ১৮ জুলাই ২০২৫:
বাংলাদেশ সরকার মানবাধিকার উন্নয়ন ও সুরক্ষার লক্ষ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের (OHCHR) কার্যালয়ের সঙ্গে একটি তিন বছরের সমঝোতা স্মারক (MoU) সই করেছে। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দেশে একটি মানবাধিকার মিশন স্থাপন করা হবে, যা সরকারি ও বেসরকারি খাতে প্রশিক্ষণ, কারিগরি সহায়তা এবং আইনগত সহায়তা প্রদান করবে।
চুক্তির আওতায়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান বজায় রাখতে বাংলাদেশকে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে OHCHR। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ সরকার কর্তৃক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে, দেশের একটি অংশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাঠামোকে আদর্শিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে করে। বাংলাদেশ একটি গভীর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যে গড়া সমাজ, এবং সরকার চায়—যেকোনো আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এই মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোক।
এ কারণেই চুক্তির আওতায় গঠিত OHCHR মিশন শুধুমাত্র অতীতে সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের মোকাবেলা, প্রতিরোধ এবং দায় নির্ধারণে মনোনিবেশ করবে। এতে কোনো সামাজিক এজেন্ডা প্রচার করা হবে না যা দেশের আইন, সংস্কৃতি বা সামাজিক কাঠামোর সাথে সাংঘর্ষিক।
সরকার স্পষ্ট করেছে, মিশন কাজ করবে স্বচ্ছতা বজায় রেখে এবং স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে। যদি ভবিষ্যতে এই অংশীদারিত্ব জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী হয়, তবে বাংলাদেশ সরকার তার সার্বভৌম অধিকার বলে চুক্তি বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
প্রসঙ্গত, যদি অতীত প্রশাসনের সময় এ ধরনের একটি OHCHR অফিস বিদ্যমান থাকত, তাহলে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঠিক তদন্ত ও বিচার সম্ভব হতো। সরকার মনে করে, এই অংশীদারিত্ব মানবাধিকারের প্রতি ন্যায়ের ভিত্তিতে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার একটি সুযোগ।
এই উদ্যোগকে সরকার তার প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা ও নাগরিক সুরক্ষার পথকে শক্তিশালী করার একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে—যা দেশের আইন, সংস্কৃতি ও জনগণের মূল্যবোধের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে।