
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ২০২৪ সাল থেকে পাঞ্জাবের আদিয়ালা কারাগারে বন্দি অবস্থায় আছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলার বিচার চলছে, যার ফলে দীর্ঘ সময় তাকে এই কারাগারে থাকতে হতে পারে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের তথ্যমতে, ইমরান খান ‘বি ক্লাস’ বিভাগের বন্দি হিসেবে থাকলেও বাস্তবে তিনি অনেক বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন, যা একই শ্রেণির অন্যান্য কয়েদিদের ক্ষেত্রে সচরাচর দেখা যায় না।
তাকে রাখা হয়েছে একটি আলাদা সেলে, যা দ্বিস্তরবিশিষ্ট (ডুপ্লেক্স)। সেলটিতে রয়েছে এলইডি লাইট, বই ও পত্রিকা পড়ার সুবিধা, হাঁটার জায়গা এবং সাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা। এছাড়া, তার পছন্দমতো খাবার রান্নার জন্য নিযুক্ত আছেন একজন কয়েদি, যিনি সকালের নাশতা থেকে রাতের খাবার পর্যন্ত তৈরি করেন।
যদিও কারাগারে ইন্টারনেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আছে, তথাপি মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইমরান খান এক্স (পূর্বে টুইটার) প্ল্যাটফর্মে ৪১৩টি পোস্ট করেছেন আগস্ট ২০২৪ থেকে এখন পর্যন্ত। নির্বাচনী নির্দেশনা থেকে শুরু করে দলীয় কর্মকাণ্ড পর্যন্ত এসব বার্তা পিটিআই সমর্থকদের কাছে পৌঁছেছে।
পাকিস্তানের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও তার উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। আদিয়ালায় অন্তরীণ হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তার বক্তব্য অন্তত ৪৫ বার দেশীয় গণমাধ্যমে শীর্ষ শিরোনাম হয়েছে। দ্য টেলিগ্রাফ, রয়টার্স, ফক্স নিউজসহ অন্তত ১০টি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন তিনি।
নিরাপত্তার কারণে ইমরান খানকে আদালতে হাজির না করেই কারাগারের ভেতরে স্থাপন করা বেঞ্চেই মামলাগুলোর শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আদালতের সময় তাকে সেল থেকে বের করা হয় এবং সেসময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলার সুযোগ পান।
তাকে দর্শনার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাতেও বাধা দেওয়া হয় না। গত তিন মাসে পিটিআইয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের ৬৬ জন নেতা, আইনজীবী এবং পার্লামেন্ট সদস্য তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানা গেছে।
কারাগারে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষাও নিয়মিত করা হয়। কখনো দিনে তিনবার পর্যন্ত মেডিকেল চেকআপ করা হয়। সাম্প্রতিক মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। প্রতিদিন দুই ঘণ্টা মুক্ত আকাশের নিচে ব্যায়াম করার সুযোগও পান তিনি।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা ও ন্যায্য অধিকার রক্ষায় তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।