
মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। ২০২৬ সাল থেকে নতুনভাবে চালু হচ্ছে একটি যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম। প্রথমে ষষ্ঠ শ্রেণিতে এটি চালু হবে এবং পরবর্তীতে ধাপে ধাপে সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, নতুন শিক্ষাক্রম হবে অভিজ্ঞতালব্ধ, জ্ঞাননির্ভর ও বাস্তবভিত্তিক। বর্তমানে এটি প্রণয়নের প্রাথমিক ধাপে রয়েছে এবং শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার গত ২৫ জুন এনসিটিবিতে এক বৈঠকে এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
নতুন কারিকুলাম তৈরির প্রস্তুতি চলছে:
এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কোন পদ্ধতিতে নতুন পাঠ্যক্রম তৈরি হবে, তা নিয়ে গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। চলতি মাসে একটি কর্মশালার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে জুলাই মাসে নেওয়া হবে।
আন্তর্জাতিক মান অনুসরণে পরিকল্পনা:
এনসিটিবির সচিব সাহতাব উদ্দিন বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা করে আমরা একটি সময়োপযোগী ও টেকসই শিক্ষাক্রম তৈরি করব। এটি ২০২৬ সাল থেকেই ষষ্ঠ শ্রেণিতে চালু হবে।”
পূর্ববর্তী শিক্ষাক্রম ও বিতর্কের প্রেক্ষাপট:
স্বাধীনতার পর ৭ বার শিক্ষাক্রম সংস্কার হয়েছে। এর মধ্যে ২০১২ সালে ‘সৃজনশীল পদ্ধতি’ চালু হয়, যা শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তি ও বিশ্লেষণমূলক ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রণীত। ২০২৩ সালে আবারও নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হয়, কিন্তু তা অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
ছাত্র ও জনসাধারণের আন্দোলনের মুখে ২০২৩ সালের শিক্ষাক্রম বাতিল করে সরকার ২০১২ সালের পদ্ধতিই ফেরত আনে। তবে এনসিটিবি জানিয়েছে, নতুন যে শিক্ষাক্রম আসছে, তাতে ২০১২ ও ২০২৩ সালের কিছু কার্যকর দিক অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ:
২০২৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রমটি পুরোপুরি চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, তবে এটি নির্ভর করবে সেই সময়কার নির্বাচিত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর।