
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। এই বিবৃতিতে তিনি বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের ইতিহাস তুলে ধরেছেন এবং সংবাদকর্মীদের অধিকার রক্ষায় জামায়াতের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও দমন-পীড়ন
মিয়া গোলাম পরওয়ার তার বিবৃতিতে বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বাকশাল গঠনের মাধ্যমে দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করা হয়। এর ধারাবাহিকতায়, ওই বছরের ১৬ জুন মাত্র চারটি সরকারি সংবাদপত্র বাদে বাকি সব সংবাদপত্রের প্রকাশনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে হাজার হাজার সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী বেকার হয়ে পড়েন, যা দেশের ইতিহাসে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য একটি “কালো দিন” হিসেবে চিহ্নিত।
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেও সংবাদমাধ্যম ও মিডিয়ার ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রয়েছে। দৈনিক আমার দেশ, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টেলিভিশন সহ অসংখ্য সংবাদমাধ্যম অন্যায়ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে বহু সাংবাদিক চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
বিতর্কিত আইন ও বর্তমান পরিস্থিতি
বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে সরকার ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং ২০২৩ সালে এর পরিবর্তিত রূপ সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে। মিয়া গোলাম পরওয়ার এই আইনগুলোকে “কালাকানুন” হিসেবে অভিহিত করে বলেন যে, এগুলো বহু সাংবাদিক ও মুক্তচিন্তার মানুষকে হয়রানি করতে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে, তিনি উল্লেখ করেন যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এই আইনটির কিছু ধারা বাতিল করেছে এবং পূর্বে বন্ধ হয়ে যাওয়া কিছু সংবাদমাধ্যম চালুর অনুমতি দিয়েছে।
জামায়াতের অঙ্গীকার
মিয়া গোলাম পরওয়ার আধুনিক বিশ্বে সংবাদপত্রকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সংবাদমাধ্যম দেশের গণতন্ত্র রক্ষা এবং সত্য প্রচারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, যদি জনগণ জামায়াতকে সরকার গঠনের সুযোগ দেয়, তবে দলটি বাক-স্বাধীনতা রক্ষা, সংবাদপত্রের উৎকর্ষ সাধন এবং সংবাদকর্মীদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করে যাবে ইনশাআল্লাহ।