
লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে দেশজুড়ে। তবে এই আলোচনাকে কেন্দ্র করে ‘অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া’ নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন,
“লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক কেন জানি অনেকের মনে জ্বালা ধরিয়ে দিয়েছে। সবাই যেন অস্থির হয়ে উঠেছে। প্রশ্ন হলো—এই জ্বালা কার জন্য, কেন?”
শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুরে মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মাঠে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচনী সময়সূচি
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে বহু আন্দোলন ও রক্তের বিনিময়ে আজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর সেই সরকারের নেতৃত্বে আছেন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি—ড. ইউনূস। এই পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারি-মার্চে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে পরিকল্পনাই বাস্তবসম্মত বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন,
“এপ্রিল মাসের মধ্যে নির্বাচন করাটা বাস্তবে অসম্ভব। রোজা, ঈদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবের কারণে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই ফেব্রুয়ারির শুরুতে নির্বাচন হলে সেটিই সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত হবে।”
জামায়াত ও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা
রিজভী সমালোচনা করেন জামায়াতের, যারা লন্ডন বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তিনি বলেন,
“আপনারা বলছেন নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে, অথচ ইতিহাসে বারবার আওয়ামী লীগের সঙ্গেই আপস করেছেন। কখনও নির্বাচন করেছেন একসাথে, কখনও আন্দোলনে জোট বেঁধেছেন।”
তিনি আরও বলেন,
“বিএনপি সবসময় জনগণের সঙ্গে ও গণতন্ত্রের পক্ষে থেকেছে, কিন্তু জামায়াত বারবার তাদের অবস্থান বদলেছে।”
খালেদা জিয়ার সংগ্রাম ও ত্যাগ
বক্তব্যে তিনি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নির্যাতন-নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি বলেন,
“বেগম জিয়া দেশের জন্য, মানুষের জন্য কারাবরণ করেছেন। ২০০ বছরের পুরোনো কারাগারের ধুলাবালি সহ্য করেছেন। চোখের অপারেশনের পরও অত্যাচার সহ্য করেছেন। তবু মাথা নত করেননি।”
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে রিজভীর কড়া বার্তা
রিজভী বলেন,
“শেখ হাসিনা রক্তাক্ত জুলাই-আগস্টে শহীদদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করেছেন। আর একের পর এক তরুণ, ছাত্র, কিশোরকে গুম-হত্যা করেছেন। এটি একটি ভুলে ভরা রাজনীতি।”