ডেক্সরিপোর্ট , দেশী বার্তা।

বুধবার (৮ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তৌহিদ হোসেন বলেন, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের সুনাম নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ভিসা পাওয়া এখন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমিও উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভিসা প্রত্যাখ্যান নিয়ে উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি একটি উদাহরণ দিচ্ছি—আপনারা জানেন, জার্মানির শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত মানসম্পন্ন এবং সেখানে পড়াশোনা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো টিউশন ফি নেই। ফলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে জার্মানিতে পড়াশোনার আগ্রহ অনেক বেড়েছে। বর্তমানে প্রায় ৮০ হাজার আবেদন সেখানে জমা পড়েছে।
উপদেষ্টা জানান, সম্প্রতি জার্মান রাষ্ট্রদূত ঢাকা ত্যাগের আগে এক আলোচনায় বলেছেন যে, তার পক্ষে বছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার আবেদন প্রক্রিয়া করা সম্ভব। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ৮০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে, যা সামাল দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, পাকিস্তান থেকে প্রতিবছর প্রায় নয় হাজার শিক্ষার্থী জার্মানিতে পড়তে যায়। বাংলাদেশ সরকার তাই অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে জার্মানি বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই সুযোগ দেয়। এ বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, যেসব দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে নেই, সেসব দেশের ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া অনেক জটিল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যারা পড়াশোনা বা কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ যেতে চান, তারা বেশি ভোগান্তির মুখে পড়ছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে অনেক দেশ পর্যটকদের জন্য অনলাইন ভিসা ব্যবস্থা চালু করেছে। তবে যারা দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষা বা কর্মের জন্য বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের সশরীরে সাক্ষাৎকার দিতে হয়। কিন্তু অনেক দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে না থাকায় আবেদনকারীদের দিল্লিতে যেতে হয়। আবার ভারতের ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে যাওয়ায় এই প্রক্রিয়াটিও আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
তৌহিদ হোসেন আরও জানান, এই সমস্যার বিকল্প সমাধান খুঁজতে সরকার কাজ করছে। যেমন, এক সময় সার্বিয়ার ভিসা নেওয়ার অনুমতি ভিয়েতনাম থেকে দেওয়া হয়েছিল। এমনভাবেই এখন চেষ্টা চলছে যাতে দিল্লির পাশাপাশি অন্য দেশ থেকেও বাংলাদেশিরা ভিসা আবেদন করতে পারেন।
শেষে তিনি বলেন, ভিসা প্রদান সম্পূর্ণভাবে সংশ্লিষ্ট দেশের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। কোনো দেশকে ভিসা দিতে বাধ্য করা যায় না। তবে এ বিষয়ে সরকারী পর্যায়ে নিয়মিত আলোচনা চলছে, যেন বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য প্রক্রিয়াটি সহজ করা যায়।