
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট: সিলেট মহানগর এলাকায় মানবপাচার, অর্থপাচার, চোরাচালান এবং নগরীর যানজট নিরসন—এই চারটি প্রধান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ট্রাভেল এজেন্টদের সহযোগিতা চেয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার জনাব আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী, পিপিএম।
আজ (২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রবিবার বিকাল ৩টায় এসএমপি সদর দপ্তর কনফারেন্স রুমে সিলেট মহানগর এলাকার ট্রাভেল এজেন্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান। সভায় ট্রাভেল এজেন্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরলে কমিশনার সেগুলোর সমাধানে আশ্বাস দেন।
পুলিশ কমিশনার বলেন, মানবপাচার, অর্থপাচার ও চোরাচালান পুলিশের আইনি দায়িত্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, অনেক মানুষ বিদেশ যাওয়ার আশায় বাড়ি-ঘর বিক্রি করে প্রতারিত হচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “প্রতারণাকারীরা তাদের কর্মফল একদিন ভোগ করতেই হবে।”
এসএমপি কমিশনার বলেন, সিলেটকে একটি নিরাপদ ও আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে হলে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও প্রতারণা চলতে দেওয়া যায় না। অপরাধ নির্মূল করতে পারলেই তা সম্ভব হবে।
নগরীর প্রধান সমস্যা হিসেবে যানজটকে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, যানজট মুক্ত হলে কর্মঘণ্টা বাঁচবে, যাতায়াতের সময় কমবে, ছিনতাইয়ের ঝুঁকি কমবে এবং রোদ-বৃষ্টি থেকেও মানুষ রেহাই পাবে।
তিনি তথ্য দিয়ে জানান, “গত ২২, ২৩ ও ২৪ সেপ্টেম্বর পরিচালিত অভিযানে দেখা গেছে—ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ নগরীর অন্যান্য হাসপাতালে দুর্ঘটনা-জনিত রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।” তিনি রিকশা বের হতে না পারাকে দুর্ঘটনার হার কমার একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। এছাড়াও, রিকশার ব্যাটারি থেকে উৎপন্ন বর্জ্য মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সিলেটকে একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চল উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, নিরাপদ ও যানজটমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে বিদেশি পর্যটকরা এখানে আসতে বেশি আগ্রহী হবে। ট্রাভেল এজেন্সিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেসব অবৈধ ট্রাভেল এজেন্সি প্রতারণা, মানবপাচার ও জালিয়াতিতে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি জানান, বৈধ এজেন্সিগুলোর কাগজপত্র পর্যালোচনা করে পুলিশের পক্ষ থেকে ‘সার্টিফায়েড স্টিকার’ দেওয়া হবে। তিনি এজেন্সিদের এই স্টিকারের প্রচার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্টিকারবিহীন কোনো এজেন্সিতে কেউ প্রতারিত হলে আপনারা তার দায় নেবেন না। তিনি বৈধ এজেন্সিগুলোকে একটি অ্যাপের মাধ্যমে একত্রে সেবা দেওয়ার পরামর্শ দেন, এতে গ্রাহকরা নিরাপদ থাকবে।
কমিশনার সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা অবৈধ ট্রাভেল ব্যবসায় জড়িত, তাদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করা আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব।