
পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের অর্থ পাচার মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীর চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া এনায়েত করিমের রিমান্ডের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ সাব্বির ফয়েজ।
আজ রোববার বেলা সোয়া ১২টার দিকে এই আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতের রিমান্ডের আদেশ শোনার পরই আসামি এনায়েত করিম চৌধুরী অসুস্থ হয়ে কাঠগড়ায় রাখা বেঞ্চে ঢলে পড়েন। পরে পুলিশ সদস্যদের কাঁধে ভর করে তাকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা যায়, চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মীর্জা, জ্যেষ্ঠ কন্যা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর এবং মেজ কন্যা তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরকে আসামি করা হয়।
দুদকের অভিযোগ, আসামিরা সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ ১১ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বেনজীর আহমেদ এই অপরাধলব্ধ অর্থ নগদে উত্তোলনের পর কোথাও বিনিয়োগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অর্থ উত্তোলনের পরই তিনি বিদেশে চলে যান। এর মাধ্যমে অপরাধলব্ধ আয়ের প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন বা ছদ্মাবৃত্ত করার লক্ষ্যে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ধারা ৪ (২) ও ৪(৩) এবং দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
মামলার অনুসন্ধান চলাকালে বেনজীরের অর্থ পাচারের সঙ্গে আসামি এনায়েত করিম চৌধুরীর সংশ্লিষ্টতা পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে বিভিন্ন সময় তাদের নামে থাকা দীর্ঘদিনের এফডিআর হিসাব মেয়াদোত্তীর্ণের আগেই একযোগে উত্তোলন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যার অর্থের গ্রহণযোগ্য কোনো উৎস দুদক খুঁজে পায়নি। এর আগে, গত ডিসেম্বরে ৭৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা করেছিল দুদক।