আখতার হোসেনের উপর আঘাত ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সম্মানকে ভূলুণ্ঠিত করেছে-মাওলানা আবদুল হালিম।

মোঃ জামিয়ার রহমান,
জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী।

আখতার হোসেনের উপর আঘাত ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সম্মানকে ভূলুণ্ঠিত করেছে-মাওলানা আবদুল হালিম।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, ফ্যাসিবাদের জননী হিসেবে শেখ হাসিনা দেশের সম্মান নষ্ট করেছে। বিদেশেও বাংলাদেশের সম্মান ও মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। নিউ ইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টার সফর সঙ্গী এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের ওপর আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা ডিম নিক্ষেপ করে তারা শুধু তাঁকেই আঘাত করেনি, বরং তারা ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের সম্মানকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। এমনকি সেখানে তাকে জুলাই সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে স্লোগান দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের জুলাই যোদ্ধা হিসেবে স্লোগান দেয়। তাহলে বোঝা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের মধ্যে এখনও অনুশোচনা আসে নাই। তারা বাংলাদেশেও ফ্যাসিজম কায়েম করেছে, বিদেশেও বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা বিনষ্ট করছে। আমরা ফ্যাসিবাদের বিচার দ্রুত ত্বরান্বিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

আজ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর নীলফামারী জেলা জামায়াত আয়োজিত আল-হেলাল একাডেমিতে অনুষ্ঠিত নীলফামারী-২ (সদর) আসনের দায়িত্বশীল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা আবদুল হালিম আরও বলেন, দেশবাসীর আশঙ্কা সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন ১৪, ১৮ ও ২৪ এর মতো হবে। এই ৩টি নির্বাচনে বাংলাদেশের ৪ কোটি তরুণ ভোট দিতে পারে নাই। আমরা চাই উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বিঘ্নে সবাই যেন ভোট দিতে পারেন। তিনি বলেন, দেশবাসী দেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে ভোট দিয়েছে। সেখানে শতকরা ৮০ ভাগ ভোট পড়েছে। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য। ডাকসুর মত আগামী জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ প্রত্যাশা করেন।

মাওলানা আবদুল হালিম পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কোনো মনোনয়ন বাণিজ্য থাকবে না। এই পদ্ধতির নির্বাচন দল, দেশ এমনকি রাজনীতির জন্যও লাভ। পিআর-এর সবচেয়ে বড় সুফল হল কেউ ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে পারবে না। তাই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে আগামীর নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতেই দিতে হবে।

মাওলানা আবদুল হালিম আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে চায়। এই লক্ষ্যে আমীরে জামায়াতের স্লোগান হচ্ছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে সৎ ও চরিত্রবান মানুষ প্রয়োজন। ভোটাররাই ঠিক করবে আগামীর নতুন বাংলাদেশ কারা চালাবে। দেশবাসী ভাল করেই জানেন- দুর্নীতিমুক্ত দেশ কারা গড়তে পারবে এবং ৩৬ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আকাঙ্ক্ষা কারা বাস্তবায়ন করতে পারবে। তিনি বলেন, নির্বাচনী কাজে আমাদের সকলকে ভূমিকা পালন করতে হবে। ভোটারদের কাছে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দেয়ার মেসেজ দিতে হবে। প্রত্যেক ভোটারের কাছে পৌঁছে আমাদের আবেদন পেশ করতে হবে।

নীলফামারী জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে দায়িত্বশীল কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিসদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দীন, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ, নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমীর ও নীলফামারী-১ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. খায়রুল আনাম ও নীলফামারী-২ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতিফ।

কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য প্রভাষক ছাদের হোসেন, প্রভাষক আব্দুল কাদিম, প্রভাষক মনিরুজ্জামান জুয়েল প্রমুখ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান মন্টু ও নীলফামারী সদর উপজেলা আমীর মাওলানা আবু হানিফা শাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *