সাবেক ভূমিমন্ত্রীর দুই সহযোগীর চাঞ্চল্যকর তথ্যে ২৩ বস্তা নথি জব্দ

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর দুই সহযোগীর চাঞ্চল্যকর তথ্যে ২৩ বস্তা নথি জব্দ

অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী উৎপল পাল ও আব্দুল আজিজের রিমান্ডে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২৩ বস্তা আলামত জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই বস্তাগুলোর ভেতর বিদেশে সম্পত্তি অর্জন সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি, বিল পরিশোধের তথ্য এবং বাড়ি ভাড়ার দলিল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দুদক।

রোববার ভোরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শিকলবাহা এলাকার সিকদার বাড়ি থেকে এসব আলামত জব্দ করা হয়। দুদকের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান জানান, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর দুই সহযোগী উৎপল পাল এবং আব্দুল আজিজকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে তারা জানান যে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েব করা হয়েছে এবং সেগুলো মন্ত্রীর স্ত্রী রুকমিলা জামানের ড্রাইভারের বাসায় রাখা আছে। তবে পুলিশ সেখানে অভিযান চালানোর খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ায় সেগুলো আগেই সরিয়ে ফেলা হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সেগুলোর অবস্থান নিশ্চিত করে আরেকটি ছোট বাসা থেকে ২৩ বস্তা আলামত জব্দ করা হয়।

দুদকের কর্মকর্তারা বলছেন, জব্দ করা কিছু বস্তা খুলে তারা বিদেশে সম্পত্তি কেনার বিল, ভাড়ার রশিদ এবং অন্যান্য আদালতের নথিপত্র পেয়েছেন। সবগুলো বস্তা এখনও পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি, তবে এর মধ্যে অর্থ পাচারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুদক উৎপল পাল ও আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল) থেকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে। আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, উৎপল পাল আরামিট গ্রুপের এজিএম হলেও দীর্ঘদিন ধরে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতেন। তিনি দুবাই ও যুক্তরাজ্যের মতো বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচিত। আব্দুল আজিজ আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেডের এজিএম হিসেবে কর্মরত আছেন এবং তিনি জাবেদের সম্পত্তি কেনাবেচা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।

গত ২৪ জুলাই দুদক এই মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদসহ মোট ৩১ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আরামিট গ্রুপের কর্মচারীদের নামে পাঁচটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে গম, ছোলাসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির নামে ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা পাচার করা হয়। ব্যাংকের ক্রেডিট কমিটি এই ঋণ দেওয়ার বিপক্ষে ১৭টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ দিলেও, পরিচালনা পর্ষদ সেগুলো উপেক্ষা করে ঋণ অনুমোদন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *