
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিরূপ মনোভাব রয়েছে বলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বুধবার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এদিন মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ হয়।
আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, মাহমুদুর রহমান একজন ইতিহাসবিদ হিসেবে নিজের জবানবন্দিতে ইতিহাসকে তুলে ধরেছেন। তবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনি যে কথাগুলো বলেছেন, সেগুলো তার নিজস্ব অভিমত।
আইনজীবী আরও বলেন, মাহমুদুর রহমান জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন না, তিনি কোনো কিছুই নিজ চোখে দেখেননি। বিভিন্ন বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জবানবন্দি দিলেও শেখ হাসিনার প্রতি তার ব্যক্তিগত বিদ্বেষ রয়েছে। তৎকালীন সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় এবং জেল খাটতে হওয়ায় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপ্রসূতভাবে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
স্টেট ডিফেন্সের এই আইনজীবী তার মক্কেলদের নির্দোষ দাবি করে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না এবং তাদের নির্দেশেও এসব ঘটেনি।
বুধবার বেলা পৌনে ১১টায় ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ শুরু হয় এবং দুপুর দেড়টায় মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ হয়। বিরতির পর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে, ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়েছিলেন নাহিদ।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ মামলায় নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি শেষ হলেই সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করা হবে। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জন জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে, বুধবার সকালে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে, যিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার উপস্থিতিতেই সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।