
অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় গত এক বছরে প্রায় ১৮ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা বৈদেশিক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছে। এর মধ্যে ভারতের আদানি পাওয়ার লিমিটেডের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। আদানি পাওয়ারের মোট বকেয়া ছিল ৭ হাজার ৯৩৪.৮৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে বর্তমানে মাত্র ২ হাজার ৩৬৩.৫০ কোটি টাকা বাকি রয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বকেয়া পরিশোধের পাশাপাশি বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৬ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা সাশ্রয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে তরল জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সার্ভিস চার্জ ৯ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে কমিয়ে প্রায় ৪৭০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এছাড়া প্রতি শিপমেন্টে আমদানির পরিমাণ বাড়িয়ে ৩৫৪ কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব হয়েছে। মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্যারিফ কমিয়ে বছরে প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
১০১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দশটি মেয়াদোত্তীর্ণ ও পুরাতন বিদ্যুৎকেন্দ্র অবসরের মাধ্যমে ৫২৫ কোটি টাকা এবং সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে ২৬৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে।
সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিগুলোর কর হ্রাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়েছে এবং স্থাপনা ভাড়া, এলডি আদায়ের মাধ্যমে ৯ হাজার ২১০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
২০২৫ সালের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা অনুমোদিত হয়েছে এবং জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে, যা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে ২০০০ থেকে ৩০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ সক্ষম করবে।
সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিক্রয়ের জন্য মার্চেন্ট পাওয়ার পলিসির খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে এবং দরপত্র আহ্বান করে মোট ৫২৩৮ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য প্রতি মাসে পরিদর্শন চালানো হচ্ছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহে আধুনিক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু করে গ্রিডের ফ্রিকোয়েন্সি স্থিতিশীল রাখা হয়েছে, যা আগের তুলনায় ১৮৭৬ ঘণ্টা বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমিয়ে ৪৭ হাজার কোটি থেকে ৩৭ হাজার কোটি টাকায় এনেছে।