গাইবান্ধায় ১ হাজার টাকার জন্য বৃদ্ধের ঘরের চাল খুলে নিল পাওনাদার

গাইবান্ধায় ১ হাজার টাকার জন্য বৃদ্ধের ঘরের চাল খুলে নিল পাওনাদার

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের রূপনাথপুর গ্রামে ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ও অমানবিক ঘটনা। মাত্র এক হাজার টাকার জন্য পাওনাদার এক হতদরিদ্র বৃদ্ধের ঘরের চাল খুলে নিয়ে গেছে, ফলে পরিবারটি চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছে। চলমান বৃষ্টিতে ভিজে দিনরাত পার করছেন ষাটোর্ধ্ব মতিয়ার রহমান ও তার পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মতিয়ারের নাতি কয়েক মাস আগে প্রতিবেশী সাজু মিয়ার ছেলে সুরুজ মিয়ার কাছ থেকে মোবাইল মেরামতের জন্য এক হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে টাকা ফেরত দিতে না পারায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর পাওনাদার সুরুজ মিয়া মতিয়ার রহমানের বাড়িতে গিয়ে বসতঘরের ছাউনির ১০-১২টি টিন জোরপূর্বক খুলে নিয়ে যায়। এতে ঘরটি কার্যত খোলা আকাশের নিচে পরিণত হয়।

মতিয়ারের স্ত্রী জমিলা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমাদের একমাত্র মাথাগোঁজার ঠাঁই এই ঘরের টিন খুলে নিয়ে গেছে। অনেক অনুরোধ করেছি, কিন্তু সুরুজ কোনো কথা শোনেনি। এখন বৃষ্টির দিনে খুব কষ্টে আছি।”

এই ঘটনায় জমিলা বেগম ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে অভিযোগের পর দুই দিন আগে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত সুরুজ মিয়াকে টিনগুলো ফেরত দিতে বললেও এখনো কোনো প্রতিকার মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

ইদিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “আমি নিজেও বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সুরুজ মিয়া আমার কথাও শোনেনি। সে কাউকে পরোয়া করছে না।”

এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবেশী হাফিজ বলেন, “হতদরিদ্র পরিবারের মাথাগোঁজার ঘরের টিন খুলে নেওয়া অমানবিক ও অগ্রহণযোগ্য। আমি দ্রুত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”

এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারের দুর্দশার চিত্রই তুলে ধরেনি, বরং গ্রামীণ সমাজে পাওনা আদায়ের নামে অমানবিক আচরণের বাস্তবতা সামনে এনেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *