
নিজস্ব প্রতিবেদক, পঞ্চগড়: নির্বাচন কমিশন (ইসি) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জন্য ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ দেবে না বলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটিকে চাপের কাছে নতিস্বীকার হিসেবে দেখছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি অভিযোগ করেন, কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা নির্বাচনের আগেই ইসির স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, তারা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার সময় সব আইনকানুন যাচাইবাছাই করেই আবেদন করেছিলেন। শুরুতে অনেকে বললেও, আইনগতভাবে ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া না যাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।
তিনি যুক্তি দেখান, শাপলা জাতীয় প্রতীকের একটি অংশ হলেও এটি এককভাবে জাতীয় প্রতীক নয়। একইভাবে জাতীয় ফল বা জাতীয় প্রতীক-সংশ্লিষ্ট আরও অনেক প্রতীক বিভিন্ন দলের নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ রয়েছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, তাহলে শাপলা কেন দেওয়া হবে না?
কমিশনের ‘লিস্টে শাপলা নেই’—এমন যুক্তি প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, লিস্ট হালনাগাদ করার দায়িত্ব ইসির। তারা কয়েক মাস আগে আবেদন করার সময়ই তা করতে পারত। তিনি বলেন, “আমরা নতুন করে আবেদনও দিয়েছি। তারপরও আইনগত কোনো যুক্তি না দেখিয়ে কেবল এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর মানে হচ্ছে, নিশ্চয়ই কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করেই কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।”
মতবিনিময়কালে সারজিস আলম তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, তারা সমমনা ও কাছাকাছি আদর্শের তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছেন। জনগণের প্রত্যাশা হলো তরুণরা ঐক্যবদ্ধ হোক।
তিনি জানান, এনসিপি বর্তমানে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে একীভূত হওয়ার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি এবি পার্টির সঙ্গে জোট (অ্যালায়েন্স) ভিত্তিক আলোচনাও এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে তারা সংসদে গিয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রসঙ্গে সারজিস আলম কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ বিদেশে পাচার করা হাজার কোটি টাকা দেশে এনে ভাড়া করা লোক দিয়ে মাঝে মাঝে মিছিল করাচ্ছে। তিনি বলেন, এগুলো আওয়ামী লীগের প্রকৃত শক্তি নয়।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যদি সত্যিই তাদের এত লোকবল থাকত, তাহলে জুলাই-আগস্টে যখন সাধারণ মানুষ ও ছাত্ররা রাস্তায় নেমেছিল, তখন তারা কোথায় ছিল?” তিনি আরও বলেন, টাকা দিয়ে ভাড়া করা টোকাইদের ভোরবেলা নামিয়ে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে। সারজিস আলমের দাবি, “অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যারা গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের রাজনৈতিক অধ্যায় শেষ হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির চ্যাপ্টার এখন ক্লোজ।”