অর্থনীতি ও রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা নিয়ে ইউনূস ও গর্ডন ব্রাউনের আলোচনা

অর্থনীতি ও রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা নিয়ে ইউনূস ও গর্ডন ব্রাউনের আলোচনা

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘের গ্লোবাল এডুকেশন দূত ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন একটি টেলিফোন সংলাপে অংশ নেন, যেখানে তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার জরুরি প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।

এই আলোচনার শুরুতে গর্ডন ব্রাউন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ইউনূসের নেতৃত্বে দেশটির স্থিতিশীলতা অর্জনের প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে যে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সেটি একটি ইতিবাচক উদাহরণ। এই পথে অগ্রসর হতে নেতৃত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

দুই নেতা বিশেষভাবে রোহিঙ্গা সংকটের শিক্ষা দিকটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থানকারী অর্ধ-মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশু এখনও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে রয়েছে। ইউনূস ও ব্রাউন উভয়েই একমত হন, এসব শিশুদের জন্য যথাযথ শিক্ষার ব্যবস্থা না করলে একটি “হারিয়ে যাওয়া প্রজন্ম” তৈরি হতে পারে, যা ভবিষ্যতের জন্য বড় ঝুঁকি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা চাই এই শিশুরা স্বপ্ন দেখতে শিখুক, এগিয়ে যেতে সাহস পাক। একটি প্রগতিশীল সমাজ গঠনে শিক্ষা অপরিহার্য।” তিনি রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আন্তর্জাতিক সহায়তার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

গর্ডন ব্রাউনও জানান, তিনি এই শিশুদের শিক্ষার জন্য গ্লোবাল এডুকেশন প্ল্যাটফর্ম থেকে সাহায্য করার বিষয়ে আগ্রহী। তিনি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চান এবং ভবিষ্যতে ক্যাম্পের অবস্থা সরেজমিনে পর্যালোচনা করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

টেলিফোন আলাপের এক পর্যায়ে দুই নেতা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার পরিকল্পনা ও দেশে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন।

এই আলোচনা দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা, মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *