চট্টগ্রামে ভুয়া ডিবি (গোয়েন্দা পুলিশ) পরিচয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া একটি প্রতারক চক্রের মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ডিবি (পশ্চিম) বিভাগ। প্রতারণার শিকার এক আইনজীবীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বুধবার (৪ জুন ২০২৫ খ্রি.) তাকে পটিয়া থেকে আটক করা হয়।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক এডভোকেট মোঃ ইউসুফ সিএমপি’র গোয়েন্দা শাখায় অভিযোগ করেন যে, গত ১৯ মে ২০২৫ তারিখে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে তার ভাই জহিরুল ইসলামের মোবাইলে কল আসে। কলদাতা নিজেকে চট্টগ্রাম ডিবি প্রধান পরিচয় দিয়ে জহিরুলকে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর ভয় দেখান এবং মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। অভিযোগকারী নিজে ওই নম্বরে ফোন দিলে তাকেও একইভাবে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেওয়া হয়। এতে ভীত হয়ে এডভোকেট ইউসুফ কথিত ডিবি অফিসারের দেওয়া বিকাশ নম্বরে কয়েক ধাপে মোট ২ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা পাঠান। পরবর্তীতে প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন সংস্থার নাম ব্যবহার করে আরও টাকা চাইলে তার সন্দেহ হয় এবং তিনি সিএমপি গোয়েন্দা শাখার শরণাপন্ন হন।
সিএমপি গোয়েন্দা শাখা অনুসন্ধান শুরু করে এবং একই কায়দায় প্রতারণার শিকার আরও কয়েকজন ভুক্তভোগীর সন্ধান পায়। এই প্রেক্ষিতে সিএমপি’র মহানগর গোয়েন্দা (পশ্চিম) বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে একটি চৌকস দল আজ চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানাধীন ইয়াকুবদন্ডি ইউনিয়নের নয়ারহাট এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানকালে প্রতারক চক্রের মূল হোতা আবুল হোসেন সোহেল (৩৬)-কে গ্রেপ্তার করা হয়। সে পটিয়া থানার নয়ারহাট গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃত আবুল হোসেন সোহেলের কাছ থেকে প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন ও সিম উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার অপরাধ স্বীকার করে এবং জানায় যে, সে তার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে মোবাইলে কল দিয়ে মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ আদায় করে আসছিল।
সিএমপি জানিয়েছে, এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। উল্লেখ্য, আবুল হোসেন সোহেলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় আরও তিনটি মামলা রয়েছে।