‘ট্রাম্প নোবেল পুরস্কার না পেলে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় অপমান’

'ট্রাম্প নোবেল পুরস্কার না পেলে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় অপমান'

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, নানা যুদ্ধ ও সংঘাতের মীমাংসার নেপথ্য নায়ক হিসেবে তাকে যদি নোবেল শান্তি পুরস্কার না দেওয়া হয়, তবে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হবে বড় এক “অপমান”। একইসঙ্গে তিনি অপরাধ ও অভিবাসন সমস্যাকে ‘অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ’ আখ্যা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা মোতায়েনের ঘোষণাও দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। প্রেসিডেন্টের এই কড়া মন্তব্য এবং সামরিক পদক্ষেপের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে কথা বলেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আমি নোবেল পুরস্কার পাব? অবশ্যই না।” এরপর নিজেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ওরা সেটা দিয়ে দেবে এমন কাউকে, যে কিছুই করেনি। এটা আমাদের দেশের জন্য বিরাট অপমান।” ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময়ে এলো যখন বিশ্বজুড়ে তার প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য অঞ্চলে শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে নিজেদের ভূমিকা তুলে ধরছিল। তিনি মনে করেন, আন্তর্জাতিক সংঘাত নিরসনে তার ভূমিকা এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে এই পুরস্কার তাকেই দেওয়া উচিত।

ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অপরাধ ও অভিবাসন সমস্যাকে একটি অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের আহ্বানে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মার্কিন জেনারেল ও অ্যাডমিরালদের উদ্দেশে তিনি জানান, ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন বেশ কয়েকটি শহরে অপরাধ দমনে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা হবে। রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা একে একে সেগুলো ঠিক করব। আর এ কাজের বড় অংশের দায়িত্ব নিতে হবে আপনাদের মধ্যে অনেককে। এটাও যুদ্ধ, এটা ভেতর থেকে আসা যুদ্ধ।” তিনি আরও জানান, তিনি ইতোমধ্যেই সেনাদের জন্য একটি বিশেষ কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স গঠনের নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন। তার ভাষায়, “কারণ এটা ভেতরের শত্রু, আর তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই আমাদের সামলাতে হবে।” প্রেসিডেন্টের এই ধরনের সামরিকীকরণ নীতি দেশের অভ্যন্তরে নাগরিক অধিকার ও আইনের শাসন নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।

বক্তব্যের শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সংবাদমাধ্যমের ওপরও তার চিরাচরিত ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি সাংবাদিকদের “অসম্মানিত বা ঘৃণ্য ব্যক্তি” বলেও আখ্যা দেন, যা মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর তার প্রশাসনের মনোভাব পুনরায় স্পষ্ট করে। ট্রাম্পের এই সামগ্রিক মন্তব্য ও সিদ্ধান্তগুলো আন্তর্জাতিক রাজনীতি থেকে শুরু করে দেশের অভ্যন্তরীণ নীতি পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *