
নারায়ণগঞ্জের শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত আদালতে জমা দিয়ে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর দাবি জানিয়েছেন দেশের ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক। রোববার সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে হত্যা করা হয়। ১২ বছর পার হলেও এখনো মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে বিবৃতি, সংবাদ সম্মেলন, সমাবেশ ও লেখনীর মাধ্যমে এ হত্যার বিচার দাবি করা হলেও বিগত সরকার বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছিল। ৫ আগস্টের পর মামলায় অগ্রগতি দেখা গেলেও বর্তমানে আবার স্থবিরতা এসেছে। তাই দ্রুত সব অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে বিচার সম্পন্ন করার আহ্বান জানান বিশিষ্টজনেরা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ভাষাসংগ্রামী ও লেখক আহমদ রফিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকার, মানবাধিকারকর্মী বদিউল আলম মজুমদার, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, আইনজীবী শাহদীন মালিক, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, শিক্ষাবিদ সলিমুল্লাহ খান, আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম, লেখক ও নারীনেত্রী মালেকা বেগম, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, গণশিল্পী কফিল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান এবং আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর, ৮ মার্চ, শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্ত সংস্থা র্যাব এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদের টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করে এবং শিগগিরই অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হবে। তবে এখনো সেই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি। ত্বকী হত্যার বিচার ও আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।