চাচাতো ভাইয়ের স্মৃতিচারণ

 ‘খালেদা জিয়া’র রোপণ করা নিমগাছটি এখনো সেখানে রয়েছে।

দেশী বার্তা প্রতিনিধি | ফেনী

BNP_ চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় নেমে এসেছে গভীর শোক। মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পরপরই শ্রীপুর গ্রামের মজুমদার বাড়িতে—খালেদা জিয়ার পৈতৃক বাড়িতে—গ্রামবাসী, আত্মীয়স্বজন ও দলীয় নেতা-কর্মীদের ঢল নামে।

দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় ধরে ফেনীর রাজনীতিতে উচ্চারিত ‘ফেনীর মেয়ে খালেদা, গর্ব মোদের আলাদা’—এই স্লোগান আজ শোকের ভারে স্মরণ করছেন এলাকাবাসী। যদিও বর্তমানে ওই বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন কেবল তাঁর এক চাচাতো ভাই।সকালে বাড়ির আঙিনায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কোরআন খতম করতে দেখা যায়। বাড়ির সামনে পতাকাদণ্ডে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। পুরো এলাকা জুড়ে ছিল নীরবতা ও শোকের আবহ।খালেদা জিয়ার চাচাতো ভাই এবং ফুলগাজী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শামীম মজুমদার বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী ও সাধারণ মানুষের কাছের একজন নেত্রী। প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকাকালীন বহুবার তিনি এই বাড়িতে এসেছেন। বাড়ির পুকুরপাড়ে তাঁর লাগানো একটি নিমগাছ আজও তাঁর স্মৃতি বহন করে। তিনি যখনই আসতেন, সরকারি প্রটোকল উপেক্ষা করে নেতা-কর্মী ও স্বজনদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বলতেন।স্থানীয় বাসিন্দা সাহাব উদ্দিন বলেন, ফুলগাজীর মানুষের জীবনের সঙ্গে খালেদা জিয়ার নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এলাকাবাসী তাঁকে নিয়ে গর্ব করতেন। তাঁর এই শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়।ফুলগাজী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হোসেন জানান, মৃত্যুসংবাদে নেতা-কর্মীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি নেতা-কর্মীর বাড়িতে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সকাল থেকেই কোরআন খতম ও দোয়ার আয়োজন চলছে। আগামীকাল জানাজায় অংশ নিতে ফুলগাজী থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ঢাকায় যাবেন।রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া প্রতিবারই জনগণের বিপুল সমর্থন পেয়েছেন। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি ফেনী-১ আসন থেকে টানা পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনবার প্রধানমন্ত্রী ও দুইবার বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই নেত্রীর মৃত্যুতে ফুলগাজীসহ পুরো ফেনী জেলা শোকে স্তব্ধ।ফেনী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন বলেন, এক দিন আগেই তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছিল। হঠাৎ এমন সংবাদে সবাই হতবাক। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি ফেনীর প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে কোরআন খতম ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জোহরের নামাজের পর থেকে প্রতিটি ওয়াক্তে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *