
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য বিকল্প প্রস্তাব এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগে সাংবিধানিক কাঠামোতে পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি। দলটির দাবি—জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিচার বিভাগ নির্ভরতা কমিয়ে স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য এবং নিরপেক্ষ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব।
রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগে স্পষ্টতা চান বিএনপি
সালাহউদ্দিন বলেন, বর্তমানে সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি যেকোনো নাগরিককে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে পারেন, যা অস্পষ্ট ও বিতর্কিত। বিএনপি চায় আপিল বিভাগের তিনজন সিনিয়রের মধ্য থেকে একজনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে।
তাঁর মতে, এটি একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব, যা গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করবে। তবে যেকোনো দল চাইলে ভবিষ্যতে ইশতেহার অনুযায়ী দুইজনের মধ্য থেকে বাছাইয়ের বিধান রাখতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বিকল্প কাঠামো
বিএনপি মনে করে, জুডিশিয়ারি নির্ভর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্ক সৃষ্টি করে। তাই বিকল্প প্রস্তাব হিসেবে তারা বিভিন্ন ফর্মুলা উপস্থাপন করে।
এর মধ্যে রয়েছে:
- প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দলের) সমন্বয়ে গঠিত কমিটি।
- প্রয়োজনে তৃতীয় বৃহত্তম দলের প্রতিনিধি যোগ করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিও প্রস্তাব করা হয়েছে।
- সর্বশেষ প্রয়োজনে ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী পুরনো পদ্ধতি পুনর্বহালের কথাও বলা হয়েছে।
জরুরি অবস্থার বিধানে সংশোধনী চায় বিএনপি
বিএনপি প্রস্তাব করেছে, সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদের ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’ শব্দটি পরিবর্তন করে “রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব, মহামারি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ” এর মতো নির্দিষ্ট পরিভাষা অন্তর্ভুক্ত করা হোক।
এছাড়া জরুরি অবস্থা ঘোষণার সময় শুধু প্রধানমন্ত্রীর সই যথেষ্ট নয়—মন্ত্রিসভার অনুমোদন ও বিরোধীদলীয় নেতার অংশগ্রহণ সংযুক্ত করতে ঐকমত্য হয়েছে বলেও জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ।