স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি — সালাহউদ্দিন আহমেদ

স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য আমরা সংগ্রাম করছি — সালাহউদ্দিন আহমেদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “আমরা এমন একটি স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য সংগ্রাম করছি, যা হবে নির্বাহী ও সংসদের প্রভাবমুক্ত এবং সত্যিকার অর্থে জনগণের অধিকার রক্ষায় দায়িত্বশীল।”

বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আয়োজনে দিনব্যাপী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “আমরা চাই সুপ্রিম কোর্ট সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করুক। এমন একটি বিচার বিভাগ চাই, যারা রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে কাজ করবে, রাজনৈতিক প্রভাব বা পক্ষপাতমূলক আচরণ থেকে মুক্ত থেকে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।”

প্রধান বিচারপতি নিয়োগে স্বচ্ছতা চায় বিএনপি

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এককভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে পারেন। তবে এই প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছ হয়, সেটিই বিএনপির দাবি। তিনি জানান, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই এই প্রক্রিয়াকে আইনগত সীমার মধ্যে এনে নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করার পক্ষে।

“আমরা চাই রাষ্ট্রপতিকে কিছু নির্ধারিত ক্রাইটেরিয়া দেওয়া হোক—যার ভিত্তিতে তিনি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন। এতে বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়বে,” বলেন তিনি।

বিচারক নিয়োগে নিরপেক্ষতা চায় বিএনপি

তিনি বলেন, “যদি সঠিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারক নিয়োগ শুরু হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের আমলে যে বিচার বিভাগ নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব পড়েছে—তা থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।”

নারী সংরক্ষিত আসন বাড়ানোর প্রস্তাব

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়াও নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়েও বক্তব্য রাখেন তিনি। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমাদের দল এবং আরও কিছু রাজনৈতিক দল সংসদে নারী সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করার পক্ষে মত দিয়েছে। এই আসনগুলো বর্তমান সংবিধানের আলোকে মনোনয়ন অথবা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে পূরণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।”

দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের পক্ষে বিএনপি

সংলাপে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের ধারণাও উঠে এসেছে। তিনি বলেন, “একশ সদস্যবিশিষ্ট একটি পার্লামেন্ট এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ নিয়ে বেশিরভাগ দল একমত। যদিও কিছু রাজনৈতিক দলের কিছু মতভেদ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে আলোচনার পর ঐকমত্যে পৌঁছানো যাবে বলে আশা করছি।”

ভবিষ্যৎ কর্মপদ্ধতি নিয়ে চলবে আলোচনা

বিএনপির এই নেতা জানান, “আমরা চাই, সংসদ, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ভারসাম্যপূর্ণ হোক। এজন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ও গ্রহণযোগ্য কর্মপদ্ধতি প্রণয়নের ব্যাপারে আরও আলোচনা প্রয়োজন হবে। সময় লাগলেও আমরা এই লক্ষ্যে এগিয়ে যাব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *