গত বছরের শেষ দিকে শেরপুরে যে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল, তার প্রভাব এখনও অনেক এলাকা থেকে কাটেনি। সেই ক্ষত না শুকাতেই আবারও নতুন করে বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে উঠেছেন জেলার নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার হাজারো পরিবার।
গত দুই দিনে শেরপুর এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ভারতের মেঘালয় রাজ্যে টানা বৃষ্টির ফলে জেলার নদ-নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যদিও এখনো সব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে, তবুও স্থানীয়রা সম্ভাব্য প্লাবনের ভয় পাচ্ছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, ২০ মে পর্যন্ত ময়মনসিংহ, সিলেট ও রংপুর বিভাগের নিম্নাঞ্চলগুলো সাময়িকভাবে পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। এতে করে কৃষি খাতেও বড় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে শেরপুর কৃষি বিভাগ মাঠপর্যায়ের কৃষকদের দ্রুত ধান কেটে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছে। বিশেষ করে যেসব জমির ধান ৮০% বা তার বেশি পেকে গেছে, তা দ্রুত কেটে নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ১৭ মে রাতে ও পরদিন সকালে কয়েক দফা মাঝারি বৃষ্টির ফলে সোমেশ্বরী নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি সেতুর পাশে সৃষ্ট পানির চাপ ও জমা ময়লার কারণে সড়কের কিছু অংশ এবং একটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইগাতীর ধানশাইল ইউনিয়নের বাগেরভিটা এলাকায়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল।
বন্যা পরিস্থিতি মাথায় রেখে জেলা প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান জানান, “আমরা প্রতিটি উপজেলায় মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করছি। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকেও সক্রিয়ভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।”
স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী দলগুলোও বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।