জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব চাপিয়ে দেওয়া হলে ঐকমত্যই থাকে না: সালাহউদ্দিন আহমেদ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব চাপিয়ে দেওয়া হলে ঐকমত্যই থাকে না: সালাহউদ্দিন আহমেদ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব সবার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলে তা “ঐকমত্য” হতে পারে না— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “আমরা আলোচনা করছি, কাছাকাছি আসছি। কিন্তু যদি আগে থেকেই নির্ধারণ করে দেওয়া হয় সবাইকে একমত হতে হবে, সেটি কোনোভাবে সম্মিলিত ঐকমত্য হতে পারে না।”

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যানালাইসিস নেটওয়ার্ক (ব্রেইন) আয়োজিত এই আলোচনা সভা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম স্মারক প্রকাশনা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন। শুরুতে তার জীবনের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং পরবর্তীতে স্মারক গ্রন্থ ও একটি ইন্টারনেট আর্কাইভ উদ্বোধন করা হয়।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,

“সংস্কারের এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, আমি সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে বলছিলাম— একটা কবিতা লিখে ফেলেন: ‘হে সংস্কার, তোমাকে পাওয়ার জন্য আর কতকাল আলাপ-আলোচনা করিবে, খানাপিনা খাইবে সংস্কার করার জন্য।’”

তিনি আরও বলেন, “তারা (ঐকমত্য কমিশন) এমন সংস্কার চাইছে, যা কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। সংবিধান তো কোনো বাইবেল নয়, সেটা একটি আইন, যেটি সময় অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে ও হওয়া উচিত।”

সংবিধানকে ধর্মগ্রন্থের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সংবিধানের বিভিন্ন ধারা পরিবর্তন করে যখন প্রয়োজন মনে করেছে, তখন করেছে। এখন বলছে আর কিছু পরিবর্তন করা যাবে না। এটি কি কোনো ধর্মীয় বিষয় নাকি? ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার কেড়ে নেওয়া কোনো গণতান্ত্রিক মানসিকতা নয়।”

সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন:
“আমরাই সংস্কারের প্রবক্তা। বর্তমান সরকার আসার দেড় বছর আগেই আমরা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। এটি এখন দেশের রাজনৈতিক মহলে একটি ‘মহাকাব্য’ হিসেবে পরিচিত।”

তিনি বলেন,

“আমরা এমন সংস্কার চাই, যাতে জনগণ উপকৃত হবে। আমরা রিজিড নই। প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে পরিবর্তন হবে। নতুন প্রজন্মের প্রয়োজন অনুযায়ী সংস্কার হতে হবে—এটাই আমাদের দর্শন।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, বিএনপির উপদেষ্টা মাহদী আমিন, এবং আরও অনেকে।

আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন ব্রেইন-এর সাঈদ আবদুল্লাহ। ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠাতা রুমি আহমেদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *