
রাজশাহীর সিঅ্যান্ডবি মোড় এলাকায় নির্মিত হচ্ছে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’। যেখানে একসময় শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ছিল, সেই স্থানেই বুধবার (১৬ জুলাই) সকাল থেকে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে ৫ আগস্ট সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই জায়গাটি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরের সামনের একটি জেলা পরিষদের জমি। এর আগে এখানে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রায় ৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ৫৮ ফুট উচ্চতা ও ৪০ ফুট প্রস্থের একটি বিশাল ম্যুরাল তৈরি করা হয়। ম্যুরালটির পাশে টেরাকোটায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্য, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চিত্র। তবে ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর সেই ম্যুরাল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ফেব্রুয়ারিতে শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি সাদা রঙ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।
নতুন স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম জানান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করছে। দেশের ৬৪ জেলাতেই একই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। রাজশাহীর স্মৃতিস্তম্ভটি হবে ১৮ ফুট উঁচু এবং এতে প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হবে।
তিনি আরও জানান, স্মৃতিস্তম্ভে রাজশাহীতে গণ-আন্দোলনে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের নাম সংযুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে গেজেট থেকে পাঁচজনের নাম সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া আন্দোলনের সময় ব্যবহৃত জনপ্রিয় স্লোগানগুলোও সেখানে লেখা থাকবে।
এদিকে রাজশাহী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. নাহিদুল ইসলাম সাজু জানান, নগরবাসীর চোখে সহজে পড়ার মতো জায়গা হিসেবেই সিঅ্যান্ডবি মোড়কে বেছে নেওয়া হয়েছে। যদিও এটি বিতর্কিত একটি স্থান, তবে শহরের তালাইমারী থেকে আলুপট্টি পর্যন্ত কোনো ভালো বিকল্প পাওয়া যায়নি। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে ম্যুরালটি ভেঙে নতুন স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের। সময় স্বল্পতার কারণে হয়তো পরে ম্যুরাল ভাঙা হবে।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার জানান, স্থান নির্বাচনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই একমত হয়েছেন। বিভিন্ন স্থান যাচাই করার পর শহীদদের পরিবার ও আন্দোলনের নেতারা এই জায়গাটিকে সর্বোত্তম বলে বিবেচনা করেছেন।