
পবিত্র আশুরা, মুসলিম উম্মাহর জন্য এক গভীর শোক ও ত্যাগের দিন। প্রতি বছর হিজরি সনের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখে এই দিনটি পালিত হয়। ইসলামের ইতিহাসে আশুরার দিনে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা হলো কারবালার হৃদয়বিদারক বিয়োগান্তক ঘটনা। এই দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হুসাইন (রা.) অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে শাহাদাতবরণ করেন।
কারবালার শোকাবহ স্মৃতি
কারবালার ঘটনা আশুরার দিনটিকে মুসলিম বিশ্বে শোকের প্রতীক করে তুলেছে। ৬১ হিজরির এই দিনে (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে হযরত ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তাঁর পরিবার ও অনুসারীরা নির্মমভাবে শহীদ হন। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে তাঁদের আত্মত্যাগ মুসলিম জাতির জন্য এক অনন্য প্রেরণা। এই আত্মদান মুসলিমদের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শিক্ষা দেয়।
আশুরার রোজা ও ইবাদত
আশুরার দিনে মুসলিমরা নফল রোজা পালনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা ও রহমত প্রার্থনা করেন। হাদিসে আছে, এই দিনের রোজা বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ করিয়ে দেয়। মুসলমানরা এই দিনে বিশেষ ইবাদত-বন্দেগি, দোয়া-দরুদ ও তওবা করে থাকেন। শিয়া মুসলিমরা ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতকে স্মরণ করে বিশেষ শোক মিছিল ও মাতমের আয়োজন করেন। সুন্নি মুসলিমরা রোজা এবং নফল ইবাদতের মাধ্যমে দিনটি পালন করেন।
পবিত্র আশুরা মুসলিমদের জীবনে ত্যাগ, ধৈর্য, সহিষ্ণুতা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক সুমহান বার্তা নিয়ে আসে। এই দিনে মুসলিম উম্মাহ অতীতের শোকাবহ ঘটনা স্মরণ করে এবং ভবিষ্যৎ জীবনে ন্যায় ও সত্যের পথে চলার অঙ্গীকার করে।