
নড়াইলের লোহাগড়ায় একটি ভয়ংকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ভ্যান চুরির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কিশোর ভ্যানচালক সুমন মোল্লা (১৫) নিহত হয়েছেন। পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট তদন্তের পর এই হত্যার সঙ্গে জড়িত শাহাদত হোসেনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার অভিযান ২৭ আগস্ট ২০২৫ খ্রিঃ রাতে নড়াইলের লোহাগড়া এলাকায় সম্পন্ন হয়।
নিহত কিশোর সুমন মোল্লা (১৫) ডহরপাড়া গ্রামের সামেলা বেগমের ছোট ছেলে। পেশায় তিনি ভ্যান চালক ছিলেন। ২১ আগস্ট সকাল প্রায় ১০টার দিকে তিনি প্রতিদিনের মতো ভাড়া ভ্যান চালানোর জন্য বাড়ি থেকে বের হন, কিন্তু আর ফিরে আসেননি। পরিবারের খোঁজাখুঁজির পরেও কিছু জানা যায়নি। এরপর ২২ আগস্ট তার মা নড়াইলের লোহাগড়া থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরী করেন।
পরিবারের সদস্যরা এবং স্থানীয় লোকজন তাকে খুঁজতে থাকলেও কোনো সাফল্য পাওয়া যায়নি। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে সুমনের ভ্যান গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন গোপালপুর বাজারে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভিকটিমকে না পেয়ে পুলিশ ও পিবিআই-এর দৃষ্টি আকৃষ্ট হয় এবং তদন্ত শুরু হয়।
পিবিআই যশোর জেলা পুলিশ, পুলিশ সুপার রেশমা শারমিনের নির্দেশনায় এবং এসআই রতন মিয়ার নেতৃত্বে ছায়া তদন্ত চালানো হয়। ২৪ আগস্ট বিকেলে লোহাগড়ার কামঠানা গ্রামের ওয়াফদা খালের পানির মধ্য থেকে সুমনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত কিশোরের পরিবারকে খবর জানানো হয় এবং নিহতের মরদেহ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
পিবিআইয়ের তদন্তে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত শাহাদত হোসেন (১৯) অর্থের তীব্র প্রয়োজনবশত একটি ভ্যান চুরির পরিকল্পনা করেছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সে নির্ধারিত সময়ে সুমন মোল্লাকে হত্যা করে ভ্যানটি বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। তবে ভ্যানের ব্যাটারীর চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় সে ভ্যানটি গোপালপুর বাজারে ফেলে পালায়।
২৭ আগস্ট রাতে শাহাদত হোসেনকে নড়াইলের লোহাগড়া এলাকায় তার শ্বশুর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার দায় স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে নড়াইলের লোহাগড়া এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হলেও, পিবিআইয়ের দ্রুত ও কার্যকরী তদন্তে হত্যার রহস্য উদঘাটিত হওয়ায় এলাকায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।