জাতীয় ঐকমত্য আলোচনায় এনসিপির ৫ দফা প্রস্তাব

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় অংশ নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫, রাজধানীর নির্ধারিত স্থানে আয়োজিত এই আলোচনায় এনসিপির তিন সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংস্কার সমন্বয় কমিটির কো-অর্ডিনেটর সারোয়ার তুষার।

আলোচনায় এনসিপি দেশের গণতন্ত্র ও সংসদীয় ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উপস্থাপন করে।

প্রথমত, সংসদ সদস্যদের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারে সমর্থন জানিয়ে দলটি বলে, অর্থবিল ও আস্থাভোট ব্যতিরেকে সংসদ সদস্যরা যেন দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ভোট দিতে পারেন। একইভাবে, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও তাদের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার থাকা উচিত।

দ্বিতীয়ত, সংসদীয় কার্যক্রমকে আরও স্বচ্ছ ও শক্তিশালী করার জন্য প্রিভিলেজ কমিটি, পাবলিক একাউন্টস কমিটি, এস্টিমেট কমিটি, পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটিসহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর স্থায়ী কমিটির নেতৃত্ব বিরোধী দল থেকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানায় এনসিপি। পাশাপাশি, দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে কমিটি বণ্টনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়।

তৃতীয়ত, নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়াতে সরাসরি ভোটে ১০০টি নারী আসন নির্ধারণে নীতিগতভাবে একমত হয় দলটি। এই আসন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ঐকমত্যভিত্তিক ও স্বচ্ছ পদ্ধতির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

চতুর্থত, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন এবং সেটির সাংবিধানিক ভিত্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে জোর দেয় এনসিপি। দলটি চায়, ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই মাসের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হোক।

পঞ্চমত, সরকারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং জনআস্থা অর্জনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যৌথ উদ্যোগকে গুরুত্ব দেয় এনসিপি।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, “গণতন্ত্রের বিকাশ ও টেকসই রাজনৈতিক সংস্কারের লক্ষ্যে এনসিপি সবসময় গঠনমূলক ভূমিকা রেখে চলবে।”

জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় এই ধরনের আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে কমিশন সূত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *