বাজেট সংকটে নাসার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, স্পেসএক্স-কেন্দ্রিক দ্বন্দ্বে নতুন জটিলতা

বাজেট সংকটে নাসার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, স্পেসএক্স-কেন্দ্রিক দ্বন্দ্বে নতুন জটিলতা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে নাসার বিজ্ঞানভিত্তিক মিশনের বাজেট অর্ধেকে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে মহাকাশ গবেষণা ও জলবায়ু পর্যবেক্ষণসহ প্রায় ৪০টি চলমান ও পরিকল্পিত মিশন বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। একই সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের মধ্যে উত্তপ্ত দ্বন্দ্ব নাসা ও স্পেসএক্সের সম্পর্ককেও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

সম্প্রতি ট্রাম্পের কর ও ব্যয় পরিকল্পনা নিয়ে ইলন মাস্কের প্রকাশ্য সমালোচনার পর ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন স্পেসএক্সের ফেডারেল চুক্তি বাতিলের। অথচ স্পেসএক্সের রকেটগুলোর ওপরই নাসা তাদের বহু গুরুত্বপূর্ণ মিশনে নির্ভর করে—বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) এ সরবরাহ এবং চাঁদ ও মঙ্গলে ভবিষ্যৎ অভিযানে।

হোয়াইট হাউসের বাজেট প্রস্তাবে নাসার সামগ্রিক বাজেট প্রায় ২৫ শতাংশ হ্রাস করার সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যেই মঙ্গল অভিযানে অতিরিক্ত ১০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ বাড়ানোর কথা থাকলেও অন্যান্য গবেষণায় তহবিল কমানো হচ্ছে।

বদলে ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে, নাসা যেন চাঁদে এবং মঙ্গলে মার্কিন অভিযানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়, অন্য সকল গবেষণাকে দ্বিতীয় স্তরে রাখে।

এদিকে, অনেক গবেষক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নাসার পরীক্ষিত রকেট ব্যবস্থা SLS বাতিল করে স্পেসএক্সের স্টারশিপ কিংবা ব্লু অরিজিনের নিউ গ্লেন রকেটের ওপর নির্ভর করার পরিকল্পনা নিয়ে। স্টারশিপের সাম্প্রতিক পরীক্ষাগুলো ব্যর্থ হয়েছে এবং নিউ গ্লেন এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে, ফলে এই পরিবর্তন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ব্রিটেনের ওপেন ইউনিভার্সিটির মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. সিমিওন বার্বার এই বাজেট প্রস্তাবকে “নীরব দুর্যোগ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “বর্তমান সিদ্ধান্তগুলো আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষী গবেষণার ভিত্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে।”

বিশেষ করে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে—যেমন মঙ্গল গ্রহ থেকে নমুনা ফেরত আনা ও ইউরোপিয়ান রোভার মিশন।

যদিও এসব বাজেট এখনো কংগ্রেসে অনুমোদিত হয়নি, রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে অন্তর্বর্তী বাজেট কার্যকর হলে অনেক মহাকাশ মিশন স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে—যা নাসার দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যৎকে বড় সংকটে ফেলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *