
ইউক্রেনের টানা ড্রোন হামলার জেরে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর প্রধান বিমানবন্দরগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় নিরাপত্তাজনিত কারণে মস্কোর বিভিন্ন গন্তব্যের জন্য নির্ধারিত অন্তত ১৪০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ প্রশাসন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার সকাল থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনী প্রায় ২৩০টিরও বেশি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। শুধু মস্কো অঞ্চলের আকাশেই গুলি করে নামানো হয়েছে ২৭টি ড্রোন।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানায়, নিরাপত্তা বিঘ্নের কারণে মস্কোর শেরেমেতেভো, ভনুকোভো এবং দোমোদেদোভো বিমানবন্দরসহ প্রধান প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে কিছু সময়ের জন্য কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। এতে প্রায় ১৩০টির বেশি ফ্লাইটের গন্তব্য পরিবর্তন করতে হয়েছে। পরে ধাপে ধাপে বিমান চলাচল আবারও চালু করা হয়।
ইউক্রেনের তরফে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়ার দোনেৎস্ক, সুমি, খারকিভ, দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক এবং জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে বিমান ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানিয়েছে, শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত রাশিয়া অন্তত ৫৭টি ড্রোন নিক্ষেপ করে, যার মধ্যে ১৮টি গুলি করে ভূপাতিত করা হয়।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এসব ড্রোন হামলার কারণে মস্কোর পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কালুগা এবং সীমান্তবর্তী রোস্তভ ও ব্রিয়ানস্ক অঞ্চলেও সাময়িক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। কালুগা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
ইউক্রেনীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, রাশিয়ার রাতভর বিমান হামলায় সুমি ও দোনেৎস্ক অঞ্চলে তিনজনের প্রাণহানি হয়েছে। সুমি শহরে একটি আবাসিক ভবনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৭৮ বছর বয়সী এক নারী নিহত হন।
এদিকে চলমান হামলা-পাল্টা হামলার মধ্যেই শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসতে তিনি প্রস্তুত। তবে মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শান্তিচুক্তির পথ দীর্ঘ হলেও তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কোনো সমাধান কার্যকর নয়।