
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলা সদরে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় ছয় সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদে আসিফ মাহমুদের অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। অন্যদিকে একই সময়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রদলও বিক্ষোভের ডাক দেয়। বিক্ষোভ শেষে আল্লাহ চত্বরে আসিফ মাহমুদের সমর্থকেরা সমাবেশ শুরু করলে বিএনপি অফিসের সামনে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি হয়।
হঠাৎ জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকা থেকে সমাবেশস্থলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। উভয় পক্ষ লাঠিসোঁটা নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। সংঘর্ষ চলাকালে দায়িত্ব পালনরত ছয় সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপজেলা সদরে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহত সাংবাদিকরা হলেন— স্টার নিউজের কুমিল্লা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মারুফ, খোলা কাগজের শাহ ইমরান, বার্তা২৪-এর মহিন নাসের খান রাফি, সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মুন্না, মাহফুজ আনোয়ার সৌরভ এবং এসএ টিভির ক্যামেরাম্যান মো. বাপ্পি।
পরে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগে ছয়জন সাংবাদিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিদের স্থানীয় হাসপাতাল ও কুমিল্লা জেলা সদরের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
মিছিলের আয়োজক উপজেলা এনসিপির তত্ত্বাবধায়ক মিনাজুল হক বলেন, “আমাদের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা হঠাৎ অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা চালায় এবং বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে আমাদের অর্ধশতাধিক সমর্থক আহত হয়েছেন।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, “ছাত্রদলের ব্যানারে আমরা বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু এনসিপি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের অফিসের সামনে হামলা করে। এতে বিএনপির ১০-১৫ জন আহত হয়েছেন। যুবদল কর্মী ওমর উল্লাহ গুরুতর আহত।”
এ সময় তিনি আরও বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের সহায়তায় মামলা করার কৌশল হিসেবেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আমিন কাদের খান জানান, বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে হঠাৎ ইটপাটকেল নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখনও কোনো পক্ষ মামলা করেনি। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।