মনু মিয়ার মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জ ছুটে গেলেন খায়রুল বাসার: “আজ পুরস্কার নয়, কাকার পাশে থাকা জরুরি”

মনু মিয়ার মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জ ছুটে গেলেন খায়রুল বাসার

নিঃস্বার্থ সেবার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কারও কাছ থেকে কিছু না নিয়ে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কিশোরগঞ্জের ইটনায় প্রায় ৩ হাজার ৫৭টি কবর খুঁড়েছিলেন মনু মিয়া (৬৭)। আজ তিনি নিজেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন।

গত এক মাস আগে তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেই সময়ই ঘটে আরেক হৃদয়বিদারক ঘটনা— কে বা কারা তার বহু বছরের সঙ্গী ঘোড়াটিকে হত্যা করে। পরে বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে। এ ঘটনায় অভিনেতা খায়রুল বাসার তাকে ঘোড়া উপহার দিতে চাইলেও মনু মিয়া বিনয়ের সাথে শুধু দোয়া চেয়ে তা ফিরিয়ে দেন।

মনু মিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে সকল ব্যস্ততা ছেড়ে অভিনেতা খায়রুল বাসার কিশোরগঞ্জে ছুটে যান। সমকালকে তিনি বলেন,

“আজ একটি অ্যাওয়ার্ড শোতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মনে হয়েছে শেষবার এই মহান মানুষকে না দেখার কষ্ট সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে।”

তিনি আরও জানান,

“মনু কাকা আমাকে বারবার তার বাড়িতে যেতে বলেছিলেন। আজ এলাম, কিন্তু তাকে আর জীবিত পেলাম না। তার জীবনবোধ, নিজের হাতে বানানো সরঞ্জাম—সব কিছু দেখে আমি অভিভূত।”

মনু মিয়ার সেবাব্রতী জীবন নিয়ে এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন পোস্ট দেন বাসার। তিনি তাকে বলেন “আজনম এক নায়ক”। তিনি লেখেন—

“মনু মিয়া অসহায় নন, বরং অসহায়ের সহায় হয়ে ওঠার প্রতীক। এই দিশাহীন সমাজে এক আদর্শের নাম মনু মিয়া।”

কোনো পারিশ্রমিক বা বকশিস ছাড়াই জীবনভর যারা মৃত্যুর পরের যাত্রার জন্য খোঁড়েন কবর, তারা থাকেন অজানা। মনু মিয়া সেই ব্যতিক্রম এক নাম, যিনি নিঃস্বার্থ কাজ দিয়ে সমাজকে চিনিয়েছেন ভালোবাসা, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সেবার প্রকৃত অর্থ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *