মানবাধিকার বাস্তবায়নে চাই আত্মশুদ্ধি ও স্বচ্ছতা: আসিফ নজরুল

মানবাধিকার বাস্তবায়নে চাই আত্মশুদ্ধি ও স্বচ্ছতা: আসিফ নজরুল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘১১তম মানবাধিকার সম্মেলন-২০২৫’-এ বক্তারা মনে করেন, মানবাধিকার কেবল আইন বা সংবিধানেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি হতে হবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য সংস্কৃতি।

সেমিনারে বক্তব্য রাখেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে কেবল আইন পরিবর্তন যথেষ্ট নয়। স্বচ্ছতা, আত্মশুদ্ধি, এবং বাস্তব উপলব্ধি প্রয়োজন। দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান স্তম্ভ—নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের জটিলতা না কাটালে তথ্য কমিশন বা মানবাধিকার কমিশনের কার্যকারিতা সীমিত থেকে যাবে।” এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপ-আমেরিকার দ্বৈত আচরণের সমালোচনাও করেন।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ড. মুহম্মদ একরামুল হক। তিনি বলেন, “মানবাধিকার রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ। তারা যেন দলের হয়ে কাজ না করে, আইনের শাসন অনুসরণ করে।”

তিনি মনে করেন, “২০২৪ সালের ক্ষমতার পরিবর্তনের পরে বাংলাদেশে একটি দুর্লভ সংস্কারের সুযোগ এসেছে, এখনই সময় সঠিক পথে এগোনোর।”

সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন গুম ও সহিংসতার শিকার পরিবারগুলোর সদস্যরাও। শহীদ শাহরিয়ার খানের মা সানজিদা খান বলেন, “আমার সন্তানের বুকে গুলি লেগেছে আমারই করের টাকায় কেনা অস্ত্র দিয়ে। যারা রাস্তায় নেমেছিল, তারাও নিরাপদ ছিল না।”

গুম থেকে ফিরে আসা মাইকেল চাকমা বলেন, “আমার পরিবার আমাকে মৃত ভেবে শেষকৃত্য পর্যন্ত সম্পন্ন করেছিল। আমার মুক্তির পরও প্রশ্ন থেকেই যায়—ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কতটা মানবিক হবে?”

অনুষ্ঠানে মানবাধিকার অলিম্পিয়াডে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার ও সম্মাননা বিতরণ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *