“জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি” চালু করল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

“জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি” চালু করল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

তরুণদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার স্মরণে “জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি” চালুর ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবছর এই বৃত্তি পাবেন বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ ও ইনস্টিটিউটসমূহের সুবিধাবঞ্চিত, প্রান্তিক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মেধাবী শিক্ষার্থীরা।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আজ মাসব্যাপী “জুলাই গণঅভ্যুত্থান” স্মরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিন শিক্ষার্থীর হাতে এই বৃত্তির চেক তুলে দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার, ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানউল্লাহ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ লুৎফর রহমান ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ টি এম জাফরুল আযম।

“জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি” চালু করল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
“জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি” চালু করল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

এই বছর “জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি” পাচ্ছেন ২,০৪০ জন শিক্ষার্থী — যারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৭২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন। উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম এত বৃহৎ পরিসরে গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে কোনো শিক্ষাবৃত্তি চালু হলো।

এবার যাঁরা প্রধান উপদেষ্টার হাত থেকে বৃত্তির চেক গ্রহণ করেছেন, তাঁরা হলেন:

  • হাবীবা আক্তার, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ
  • এস এম আবু তালেব, তেজগাঁও সরকারি কলেজ
  • খন্দকার মাহমুদুল হাসান, ঢাকা কমার্স কলেজ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় প্রতিষ্ঠানটির অন্তর্ভুক্ত ৩২ জন শিক্ষার্থী শহীদ হন।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার বলেন, “বাংলাদেশের তরুণেরা এক বছর আগে যে ঐতিহাসিক জনঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছিল, তা আমাদের রাষ্ট্রকাঠামো ও রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এক নতুন পথ দেখিয়েছে। সেই সাহসী পদক্ষেপের ফলেই আজ আমরা একটি অধিকারের রাষ্ট্র গড়ার পথে হাঁটছি।”

তিনি আরও বলেন, “এক যুগেরও বেশি সময় যাঁরা রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রেখেছিল, তারা জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ মৌলিক অধিকারগুলোকে দমন করেছিল। এখন নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে জনগণের পক্ষে, এবং সেই দায়িত্ব পালনে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হবে শিক্ষা।”

সিআর আবরার বলেন, “শিক্ষার মাধ্যমে শুধু দারিদ্র্য বিমোচন নয়, বরং একটি মূল্যবোধসম্পন্ন জাতি গড়ে তোলা সম্ভব। আমরা এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে চাই, যেখানে প্রতিটি শিশু, তরুণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী জ্ঞান, মানবতা ও নেতৃত্বের বিকাশে অংশ নিতে পারবে।”

তিনি জানান, সরকার ইতোমধ্যেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করছে।

এই বৃত্তির মাধ্যমে দেশের তরুণদের মাঝে নতুন স্বপ্ন ও সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে— এমনটাই আশা করছেন আয়োজকেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *