জিগাতলায় আলোচিত আলভি হত্যা: রহস্য উদঘাটন, চারজন গ্রেফতার

রাজধানীর হাজারীবাগ থানাধীন জিগাতলা এলাকায় সামিউর রহমান খান আলভি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পূর্ব শত্রুতার জেরে সংঘটিত এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) হাজারীবাগ থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো—
১. মো. রায়হান (২০)
২. মো. হাবিবুর রহমান মুন্না (২৬)
৩. সমতি পাল (২৩)
৪. কাউসার (২১)।

ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের ধানমন্ডি ও হাজারীবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনার পেছনের কাহিনি

হাজারীবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, নিহত সামিউর রহমান খান আলভি রাজধানীর হাজারীবাগ থানার ৪২/জি, মনেশ্বর রোডে তার পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। তিনি ড. মালেকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

গত ১৬ মে ২০২৫ তারিখে আলভি তার তিন বন্ধু মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. জাকারিয়া ও মো. ইসমাঈল হোসেনের সঙ্গে ধানমন্ডি লেকপাড়ের একটি রেস্টুরেন্টে অবস্থান করছিলেন। এ সময় গ্রেফতারকৃতরা ও তাদের অজ্ঞাত সহযোগীরা কৌশলে তাদের জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ২১/১ নম্বর বাসার সামনে ডেকে নেয়। সেখানে গিয়ে তারা আলভি ও তার বন্ধুদের গতিরোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।

সামিউর ও তার বন্ধুদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি ও চাপাতি দিয়ে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত ৯টা ৫ মিনিটে সামিউরকে মৃত ঘোষণা করেন। তার তিন বন্ধু বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তদন্ত ও গ্রেফতার

সামিউরের বাবা মো. মশিউর রহমান খান থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তদন্তে নামে। তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেফতারকৃতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়।

  • ১৮ মে বিকাল ৫টায় রায়হানকে
  • ১৯ মে দুপুর ৩টায় সমতি পালকে হাজারীবাগের মধুবাগ এলাকা থেকে
  • ২১ মে রাত ১২:৩০টায় মুন্না ও কাউসারকে ধানমন্ডি লেক বাগানবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, ১৫ মে রাতে বাগানবাড়ি লেক এলাকায় মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে আলভি ও তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরেই তারা পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালায়।

আইনি পদক্ষেপ

হাজারীবাগ থানা পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত পলাতক অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জনমনে ক্ষোভ ও উদ্বেগ

জিগাতলার এই আলোচিত হত্যাকাণ্ড ঘিরে এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই দাবি করছেন, তরুণদের মধ্যে সহিংস প্রবণতা বাড়ছে এবং এলাকায় পুলিশের টহল ও নজরদারি আরও জোরদার করা প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *