
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের ৬ষ্ঠ সাধারণ সভায় দলীয় গঠনতন্ত্র সংশোধন এবং দলের ভবিষ্যৎ কাঠামোগত রূপায়ণে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত এ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ৮টি সিদ্ধান্ত পাশ হয়।
১. দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের নিয়ম:
এনসিপি দলের শীর্ষ দুই নেতা — সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক — সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। কোনো একজন সদস্য তাঁর জীবনে সর্বোচ্চ দুইবারই এসব পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
২. নেতৃত্বের জবাবদিহিতা:
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দলের ‘রাজনৈতিক পরিষদ’-এর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। অর্থাৎ, তাঁরা স্বাধীন নন — দলের নীতিনির্ধারক পরিষদের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবেন।
৩. রাজনৈতিক পরিষদ গঠন:
এটি হবে দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক কমিটি। এতে অন্তত ১১ জন ও সর্বোচ্চ ১৫ জন সদস্য থাকবে। এর মধ্যে ১১ জন সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন, যাঁদের অন্তত ৩ জন নারী হতেই হবে। বাকি ২ জনকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেরা মনোনয়ন দেবেন।
৪. জাতীয় কাউন্সিল (ন্যাশনাল কাউন্সিল) গঠন:
এই কাউন্সিল বড় বড় সিদ্ধান্ত নেয়, যেমন— রাজনৈতিক পরিষদ গঠন, শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন ইত্যাদি। এটি গঠিত হবে কেন্দ্রীয় ও জেলা/উপজেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে।
৫. কেন্দ্রীয় কমিটির কাঠামো ও মেয়াদ:
দলটির কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকবেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক, বিভাগীয় নেতা ও জেলা পর্যায়ের প্রতিনিধি। এই কমিটির মেয়াদ হবে ৩ বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নতুন কাউন্সিল (নির্বাচন) করতে হবে।
৬. নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত:
এ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে দলটি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
৭. নিবন্ধনের জন্য নির্দিষ্ট প্রতিনিধি নিয়োগ:
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে দলের তিন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে—
- নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
- খালেদ সাইফুল্লাহ
- জহিরুল ইসলাম মুসা
৮. খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন ও পরবর্তী সংশোধন:
সভায় দলের গঠনতন্ত্রের খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে আগামী কাউন্সিলের আগে যদি দরকার হয়, তাহলে প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক কমিটি এটিতে পরিবর্তন আনতে পারবে।