বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে অনিয়ম ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল তাকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছিল ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ।
২১ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ইসলামী ব্যাংকে পরিচালিত সাম্প্রতিক অডিটে নানা ধরনের আর্থিক অনিয়ম ও জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে, যার সঙ্গে মুনিরুল মওলার সরাসরি সম্পৃক্ততা ধরা পড়ে।
এ প্রেক্ষিতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ তার অপসারণের সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দেয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে অনুমোদন দেয়। ইতোমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে সংগৃহীত অনিয়ম ও দুর্নীতির নথি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়েছে। দুদক এখন আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে এবং ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি নিয়ন্ত্রণ করছিল এবং বিভিন্নভাবে প্রায় ৯১ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে।
নতুন পর্ষদ গঠনের পর চারটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়ে ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন ও হিসাব খতিয়ে দেখা হয়। এতে ব্যাংকটির নানাবিধ দুর্বলতা প্রকাশ পায়। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা, যা ব্যাংকের মোট বিতরণকৃত ঋণের ৪২.২২ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ২০ বছরের সময়সীমা চেয়ে প্রভিশন ঘাটতি পূরণের আবেদন করেছে।
এর আগে ব্যাংকটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বর ভিত্তিক তথ্যে খেলাপি ঋণ দেখিয়েছিল ৩২ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা, যা ছিল মোট ঋণের ২১.০৮ শতাংশ।