
বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতায় ফিরছে। অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিগত পদক্ষেপের ফলে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি এপ্রিল মাসে কমে দাঁড়িয়েছে ৯.১৭ শতাংশে, যা আগের মাসে ছিল ৯.৩৫ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে এ হার ছিল ৯.৭৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়, এপ্রিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮.৬৩ শতাংশে। তবে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও এখনো তা ৯.৬১ শতাংশে রয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যস্ফীতি মানে হলো—গত বছরের তুলনায় এই বছরে একই পণ্য কিনতে খরচ বেড়ে যাওয়া। উদাহরণস্বরূপ, গত বছরের এপ্রিলে যে পণ্য ১০০ টাকায় পাওয়া যেত, চলতি বছরের এপ্রিলে তার দাম হয়েছে ১০৯ টাকা ১৭ পয়সা।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাম অঞ্চলে এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯.১৫ শতাংশ, যা শহরে ছিল ৯.৫৯ শতাংশ। অর্থাৎ শহরের মানুষকে জীবনযাত্রার ব্যয়ে তুলনামূলক বেশি খরচ করতে হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি একবারে ১৪.১০ শতাংশে উঠে গিয়েছিল, যা ছিল গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে শীতকালীন সবজি ও নিত্যপণ্যের দাম কমায় তা ধীরে ধীরে কমে বর্তমানে ৮.৬৩ শতাংশে নেমেছে।
তবুও বাংলাদেশ এখনও ‘লাল’ শ্রেণিতে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। মার্চ ২০২৫-এ প্রকাশিত ‘ফুড সিকিউরিটি আপডেট’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের আরও ১৪টি দেশ খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, মূল্যস্ফীতি আরও নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের বাজার তদারকি, সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং নীতিগত স্থিতিশীলতা ধরে রাখা জরুরি।