
কুয়ালালামপুর, ১৩ আগস্ট, ২০২৫: বৈশ্বিক হালাল পণ্যের দ্রুত বর্ধনশীল বাজারে প্রবেশ করতে, বাংলাদেশ একটি হালাল শিল্প পার্ক উন্নয়নে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চেয়েছে। মঙ্গলবার কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার হালাল শিল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “চলুন এটা নিয়ে একটি পদক্ষেপ নেওয়া যাক।” মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিভাগের অধীনে হালাল অ্যাফেয়ার্স সমন্বয়কারী দাতিন পাদুকা হাজাহ হাকিমা বিনতি মোহাম্মদ ইউসুফের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এই বৈঠকে অংশ নেয়।
উপস্থিত কর্মকর্তারা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্যের বাজারের আকার ৩ ট্রিলিয়ন ডলার, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৪টিরও বেশি হালাল শিল্প পার্ক পরিচালনা করে মালয়েশিয়া এই বাজারের একটি বড় অংশ দখল করে আছে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে বাংলাদেশের এই বাজারে যোগদানের বিশাল সম্ভাবনা আছে। তবে এর জন্য অবকাঠামো ও সার্টিফিকেশন পদ্ধতি শক্তিশালী করা জরুরি। বর্তমানে, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ একমাত্র প্রতিষ্ঠান যা হালাল পণ্যের অনুমোদন দেয় এবং এখন পর্যন্ত মাত্র ১২৪টি কোম্পানিকে সনদ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন হালাল শিল্প পার্ক স্থাপনে মালয়েশিয়ার সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন, “হালাল পণ্য শিল্প গড়ে তোলার জন্য কী কী প্রয়োজন, তা আমরা হয়তো একসাথে খুঁজে বের করতে পারি।” অনেক বাংলাদেশি কোম্পানি হালাল পণ্য রপ্তানি করতে আগ্রহী বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বৈঠকটিকে একটি মূল্যবান অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আপনাদের অন্তর্দৃষ্টির জন্য ধন্যবাদ, এটি হালাল পণ্যের উপর একটি ক্লাসের মতো মনে হয়েছে।”
বৈঠকের পর, মালয়েশিয়ার হালাল শিল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দেশের চাহিদা যাচাই করতে খুব শিগগিরই একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে পাঠানো হবে। উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া হালাল বাস্তুতন্ত্রের ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতা স্মারক বিনিময় করেছিল।
এই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, জ্বালানি উপদেষ্টা ফৌজুল কবির খানসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।