জামায়াতকে ১৯৭১ সালের জন্য ক্ষমা চেয়ে নির্বাচনে আসার আহ্বান বিএনপি নেতা দুদুর

জামায়াতকে ১৯৭১ সালের জন্য ক্ষমা চেয়ে নির্বাচনে আসার আহ্বান বিএনপি নেতা দুদুর

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু জামায়াতে ইসলামীর প্রতি ১৯৭১ সালের ভূমিকার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সেইসাথে তিনি নির্বাচনমুখী হওয়ার পরামর্শ দেন।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদু বলেন, “১৯৭১ সালে আপনারা যে ভুল করেছিলেন, তা সংশোধনের এখনো সুযোগ আছে। এখনও সেই ভুলের জন্য ক্ষমা চাননি। ক্ষমা চাইলেই কিছুটা হলেও সেই দায় লাঘব হবে। কিন্তু যদি নির্বাচন প্রতিহত করতে মাঠে নামেন, তাহলে আগের ভুল আরও বড় হবে।”

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের এই অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, “একসময় রাজনৈতিক প্রয়োজনে, গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে বিএনপি জামায়াতের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তখন সাধারণ মানুষের কাছাকাছি আসার সুযোগ আপনারা পেয়েছিলেন। বিএনপি রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জাতীয় স্বার্থে আপনাদের পাশে ছিল। সেটা মনে রাখলে দেশ ও আপনার দলের জন্য ইতিবাচক হবে।”

বর্তমানে বিএনপিই একমাত্র দল যার ভিত্তি সারাদেশে বিস্তৃত বলে দাবি করে তিনি বলেন, “যেখানে ১০ জন থাকে, সেখানে ৬-৭ জন বিএনপির সমর্থক। আওয়ামী লীগ এখন অস্তিত্ব সংকটে। বিএনপি ঘুরে দাঁড়ালে জনগণ নিজেরাই দেশ রক্ষা করবে—পুলিশ, সেনা কারও দরকার হবে না।”

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি দুদু আরও বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে একটি ভালো নির্বাচন সম্ভব। বিএনপি সেই প্রচেষ্টার সাথে শুরু থেকেই আছে। সরকারও নির্বাচন ঘোষণার পথে এগোচ্ছে, নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু কিছু পক্ষ তা প্রতিহত করার ঘোষণা দিচ্ছে, আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। নির্বাচন না হলে দেশ অনিশ্চয়তার দিকে চলে যাবে।”

শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকাল নিয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পর দেশবাসী যেসব আশা নিয়ে ছিল, সেসব পূরণ হয়নি। সেই সময় ৪০ হাজার বিরোধী নেতা নিহত হন, দুর্ভিক্ষে মানুষ প্রাণ হারায়। শহীদদের স্বপ্ন ছিল ভাত-কাপড় ও চাকরি—সেসব কিছুই পায়নি জাতি। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত যারা দেখেনি, শুধু বই পড়ে সব বোঝা সম্ভব না।”

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারী, কৃষক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাবুল আহমেদ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *